Saturday, August 31, 2019

আহলান সাহলান শুভ নববর্ষ মহরম মাস আজ আরবী বৎসরের প্রথম দিন।

মহরম আরবী বৎসরের প্রথম মাস, যা আরবী শব্দ, শাব্দিক অর্থ -সন্মানিত,নিষিদ্ধ ইত্যাদি। পবিত্র কুরানে চারটি মাসকে সন্মানিত বলা হয়েছে, তন্মধ্যে একটি হল মহরম।
*কুরানে এসেছে-
" নিশ্চয়ই আল্লাহর বিধান ও গননার মাস বারটি,আসমানসমুহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সন্মানিত।"(সুরা তাওবাঃ৩৬)
শুধু তাই নয় এই মাসকে হাদীস শরীফে শাহরুল্লাহ বা আল্লাহর মাস বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে ।
আমরা সকলেই জানি আরবী হিজরী বৎসর চালু হয়েছে আমাদের প্রিয় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের মধ্য দিয়ে।তাই এই মহরম মাসের সাথে হিজরতের মহান ঘটনা জড়িত। যেই হিজরতের মধ্য দিয়ে ইয়াসরেবের নাম পরিবর্তন হয়ে মাদীনা হয়েছে। সেই সোনার মাদীনা দেখতেই আশেকরা পাগল। যেখানে রয়েছে রাওজাতুন্নাবী (দঃ)।
মহরম মাসের আরেকটি বিশেষ দিন হল। ""ইয়াওমে আশুরা বা দশ তারিখ দিন"" এই দিনটি বিশেষ কারনেই যুগে যুগে বিভিন্নভাবে পালিত হয়ে আসছে।
এই দিনের রোযা রাখার ব্যপারে অনেক সহিহ হাদীস রয়েছে।
১।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-"রমজানের রোজার পরে সবচেয়ে উত্তম রোজা হল আল্লাহর মাস মহরমের রোজা এবং ফরজ নামাজের পর সবচেয়ে উত্তম নামাজ হল রাতের নফল(তাহাজ্জুতের) নামাজ"( মুসলিম ,বাবু ফাদলি ছওমী মুহাররাম)
২।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন –"আশুরার দিনের রোজার ব্যপারে আমি আল্লাহর কাছে কামনা করি যে ,তিনি পূর্বের এক বৎসরের গুনাহ মাফ করে দিবেন।" (ইবনে মাজাহ,তিরমিযী,শুয়াবুল ঈমান)
৩।হযরত ইবনে আব্বাস (রাদিঃ) থেকে বর্নিত ,রাসুলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মদীনায় আগমন করলেন,আশুরার দিন ইয়াহুদীদের রোজা পালন করতে দেখলেন। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন আজ কোন দিন যে তোমরা রোজা পালন করছো ? তারা বলল আজ এক মহান দিন যেই দিনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুসা (আঃ)ও তার সম্প্রদায়কে বিজয় দিয়েছিলেন আর ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়কে ডুবিয়ে ছিলেন।মুসা (আঃ)আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ে রোজা রাখতেন তাই আমরাও তার অনুসরনে রোজা পালন করি ,তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন তোমাদের চেয়ে আমরা মুসা (আঃ)-র নিকট বেশি হকদার নিকটবর্তী । অতঃপর তিনি নিজে রোজা রাখলেন ও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন। (মুসলিম-বাবু ছাওমী ইয়াওমী আশুরা)
হযরত মুসা (আঃ)ও তার সম্প্রদায় এই দিনেই আল্লাহর রহমতে সমুদ্রের মাঝে রাস্তা হওয়ায় সাগর পার হয়ে গেল,আর ফেরাউনও তার দল বল নিয়ে ডুবে মরল । ঠিক অনরুপ অসংখ্য ঘটনা এই দিনে ঘটেছে বলে বিভিন্ন বর্ননা পাওয়া যায়।
ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী (রঃ)তার কিতাব "লাত্বায়েফুল মায়ারেফ"এ এবিষয়ে বিভিন্ন হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে বর্ননা করেছেন যে,আশুরার দিনে আল্লাহ তায়ালা আদম (আঃ)-র তাওবা কবুল করেছেন, এবং এই দিনেই পৃথিবীতে প্রেরন করেছেন।
(দেখুন,লাত্বায়েফুল মায়ারেফঃ-মিন ফাদ্বাহিলি ইয়াওমু আশুরা)
সুরা হুদের ব্যাখ্যায় তাফসীরে দুররুল মান্সুরে আরো কয়েকটি বর্ননা রয়েছে,
عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : يوم عاشوراء اليوم الذي تاب الله فيه على آدم واليوم الذي استوت فيه سفينة نوح على الجودي واليوم الذي فرق الله فيه البحر لبني إسرائيل واليوم الذي ولد فيه عيسى صيامه يعدل سنة مبرورة
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)হইতে বর্নিত তিনি বলেন-
আশুরা এমনই একটি দিন, যেই দিন আল্লাহ তায়ালা আদম (আঃ)এর তাওবাকে কবুল করেছেন।এবং যে দিন নুহ (আঃ)এর কিস্তি জুদি নামক পর্বতে থেমেছিল।যেইদিন আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বনী ইসরাঈলের জন্য সমুদ্রকে দুই ভাগ করে দিয়েছিলেন (মানে সমুদ্র দুই ভাগ হয়ে রাস্তা হয়েছিল)। যেইদিন ঈসা (আঃ)জন্ম গ্রহন করেছিলেন। এই দিনের রোজা এক বৎসরের সমান স্বীকৃ্ত।
(আদদররুল মান্সুর লিসসুয়ুতি)
*এই বর্ননাটা রুহুল মায়ানীতেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এই দিনে কারবালার হ্রদয়বিদারক ঘটনা যা ঘটেছিল- যেই ঘটনাটা শুনলে সকলের হৃদয় কেঁদে উঠে ,যা ঘটেছিল কারবালার প্রান্তরে। এই পথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে হৃদয় বিদারক ঘটনা । নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (রাঃ)কে স্বপরিবারে বাহাত্তুর জনকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল । যারা এই হত্যাকান্ডকে ঘটিয়ে ছিলো তাদের প্রতি রইল ঘৃ্না , আল্লাহর কাছে তাদের যথাযথ শাস্তির জন্য দোয়া করি। পাশাপাশি আমাদের প্রানপ্রিয় নাবী পরিবারের প্রতি আল্লাহর অশেষ রহমত্ যেন বর্ষিত হতেই থাকে এ দোয়া ও প্রার্থনা থাকবে জীবন ভর।
"রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম বলেছেন –যে হাসান ও হুসাইন (রাদিঃ)কে ভালবাসলো সে যেন আমাকেই ভালবাসলো আর যে তাদেরকে ঘৃণা করল সে যেন আমাকেই ঘৃণা করল" (মুস্তাদরিকে হাকিম)
পরিশেষে, আল্লাহর কাছে ক্ষমা কামনা করছি।পবিত্র আশুরার সকল বরকত রহমতে প্রার্থনা করছি।আমিন।

Friday, August 30, 2019

জুমার দিন দরুদ শরীফ পাঠের ফজিলত:


দুই সিজদার মধ্যবর্তী দোয়া:


#STOP_DAB ড্যাব (DAB = Devils are bright.) সাইন !

DAB এর উৎপত্তি মূলত আমেরিকা থেকে। সেখানে স্যাটানিজম নামে একটি ধর্ম আছে,যারা শয়তানের পূজা করে থাকে। মূলত: তারা একে অপরের সাথে দেখা হলে কুশল বিনিময়ের পূর্বে DAB দেয়।
আস্তে আস্তে তাদের এই DAB দেয়ার রীতিটি বিভিন্ন সংস্কৃতিতে সঞ্চালিত হতে থাকে খুবই সুকৌশলে। আধুনিক ডান্সে DAB এখন একটি অপরিহার্য্য অংশ হয়ে দাড়িঁয়েছে।
খেলার মাঠে খেলোয়ারেরা তাদের জয়োৎসব পালন করে DAB দিয়ে।
সিনেমারা বিভিন্ন দৃশ্যে অত্যন্ত সুকৌশলে DAB ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে।
২০১৬-১৭ এর দিক দিয়ে এই DAB আমেরিকা ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
বেশীর ভাগ মানুষ না জেনেই শুধুমাত্র আধুনিকতার সাথে তাল মেলাতে DAB য়ে।
American pop community & some great businessmen follows সাতানিসম (শয়তানের উপাসনা)।
DAB এর পূর্ণরূপ Devils are bright. যার অর্থ অনেকটা এরকম দাড়ায়- "শয়তানেরা চিরউজ্জল" (নাউজুবিল্লাহ)।
এটা সাতানিসম বা শয়তানের পূজা কে প্রমোট করে।জঘন্যতম শিরকের একটি এটি। কারন, এই চিহ্ন দ্বারা শয়তানকে সিজদাহ করা বোঝানো হয়। এটা আল্লাহ্‌-তায়ালাকে সিজদাহ করার বিপরীত। বর্তমানে তারকা খেলোয়াড়দের থেকে শুরু করে অনেকেই এই চিহ্নের অনুকরণ করছে। এটাকে ফান হিসেবে দেখছে।
কিন্তু এই কাল ফান আপনার জাহান্নামে যাওয়ার কারন হতে পারে! এটি ইলুমিনাতি (Illuminati) বা শয়তানের পূজারিদের দ্বারা মুসলিমদের ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ছড়ানো। অনেক স্বনামধন্য তারকাদেরই এই দলের অন্তর্গত।
সুতরাং আসুন, DAB দেয়া থেকে বিরত থাকি। যারা জানে না তাদের সচেতন করি। ঈমান আক্বীদা রক্ষা করি। আমিন।

আলহামদুলিল্লাহ পাঠের ফজিলত:

সুখে-দু:খে সব সময় আলহামদুলিল্লাহ বলতে হয়। আলহামদুলিল্লাহ বললে আল্লাহ আরো ভাল রাখবে। অবস্থার আরো উন্নতি করে দেবে। ভাল থেকে আরো ভাল করে দেবেন।আলহামদুলিল্লাহ না বললে অবস্থা যা আছে ওটাকে আরো খারাপ করে দেবেন।
সব সময় শুকরিয়া করতে হবে, আল্লাহর। শুকরিয়া করলে আল্লাহ নেয়ামত বাড়িয়ে দেন।
আল্লাহ বলেন:
“যদি নিয়ামতের শুকরিয়া কতো তবে নেয়ামত বাড়িয়ে দেব,আর যদি কুফরী করো আজাব দিব।”
এখন আমরা আজাব চাইবো নাকি নিয়ামত চাইবো ? নিয়ামত চাইলে সর্বদা শুকরিয়া করতে হবে আল্লাহর।
আলহামদুলিল্লাহ’— এর অর্থ কী?
প্রকৃতপক্ষে এর মূল অর্থ দুটি। আলহামদুলিল্লাহ এর দুটি অংশ রয়েছে।
প্রথমটি হল— আপনি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ (আল্লাহকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন), কৃতজ্ঞতা (শুধুমাত্র) আল্লাহর জন্য।
আর দ্বিতীয় অংশ হলো— প্রশংসা; প্রশংসা আল্লাহর জন্য। কৃতজ্ঞতা ও প্রশংসা দুটি আলাদা বিষয়।
একদিকে প্রশংসা আর অন্যদিকে কৃতজ্ঞতা, দুটি দিক।
মনে করুন: আপনি একটি সুন্দর বাড়ি দেখলেন, এবং প্রশংসা করলেন, কিন্তু আপনি বাড়িটিকে ধন্যবাদ দিবেন না। আপনি একজন অসাধারণ খেলোয়াড় দেখলেন, যিনি ফুটবল খেলেন, তিনি একটি অসাধারণ গোল করলেন। আপনি ঐ খেলোয়াড়ের প্রশংসা করবেন, কিন্তু আপনি ঐ খেলোয়াড়কে ধন্যবাদ দিবেন না, আপনি ঐ খেলোয়াড়ের প্রতি কৃতজ্ঞ হবেন না।
আপনি একটি অসম্ভব সুন্দর গাড়ি দেখলেন। আপনি গাড়িটির প্রশংসা করবেন, কিন্তু গাড়িটির প্রতি কৃতজ্ঞ হবেন না। আবার মাঝে মাঝে উল্টোটাও ঘটে। কিছু মানুষের প্রতি আপনি কৃতজ্ঞ থাকেন যদিও আপনি কখনো তাদের প্রশংসা করবেন না।
এমন ঘটে। এর উদাহরণ হচ্ছ— আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা একজন মুসলিমকে সকল অবস্থাতেই তার বাবা-মার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে বলেন, এমনকি তার বাবা-মা মুশরিক হলেও়! আপনাকে অবশ্যই আপনার পিতা-মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। এমনকি যদিও তারা আপনাকে শিরক করার জন্য জোর করেন। তারা চান আপনি ঈমান পরিত্যাগ করেন, তারপরও আপনাকে উনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। আপনি তাদের শিরক-এর প্রশংসা করবেন না, কিন্তু তারপরও আপনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবেন।
অতএব জীবনের কোনো কোনো সময় আপনি প্রশংসা পাবেন কৃতজ্ঞতা ছাড়া, আবার কখনো কখনো কৃতজ্ঞতা দেখবেন প্রশংসা ছাড়া।
আর একটি বিষয়: যার মধ্যে কৃতজ্ঞতা আছে কিন্তু প্রশংসা নেই, যেন বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়। আপনারা ফিরাউনের বিষয়টি জানেন। ফিরাউন পছন্দ করুক আর নাই করুক সে মুসা (আ.)-কে তার প্রাসাদে বড় করেছে। এবং মুসা (আ.) ফিরাউনের কাছে অনেক অনেক বছর পর ফিরে আসেন। এরপর ফিরাউন প্রকৃতপক্ষেই মুসা (আ.)-কে মনে করিয়ে দিয়ে বলেছিল যে, তুমি কি এখানে অনেক বছর থাকোনি? তুমি কি এখানে অনেক বছর পার করোনি? আমরা কি তোমাকে শিশুকাল থেকে বড় করিনি এই বাড়িতে? ফিরাউন তার দয়ার কথা মুসা (আ.)-কে মনে করিয়ে দিচ্ছিল এবং স্বাভাবিকভাবেই কেউ যখন আপনার উপকার করে, আপনি তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকেন। তাই মুসা (আ.) ও এই উপকারের কথা স্বীকার করেন। এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি (মুসা আ.) বলেন— হ্যা তুমি আমার প্রতি দয়া করেছিলে।
যখন আপনি কারো উপকারের কথা স্বীকার করেন, তখন আপনি তাকে ধন্যবাদ দেন। এমনকি মুসা (আ.) ফিরাউনকে ধন্যবাদ দেন। যদিও তিনি কখনই তার প্রশংসা করবেন না। তাই আপনি কাউকে ধন্যবাদ দিতে পারেন প্রশংসা ছাড়া আর কাউকে প্রশংসা করতে পারেন কৃতজ্ঞতা ছাড়া।
যখন আমরা আলহামদুলিল্লাহ বলি— এর মানে আমরা বলি যে আমরা আল্লাহর প্রশংসা করছি তিনি যা কিছু করেন তার জন্য। উনি যা কিছু করেন তার সবকিছুই অসাধারণ, মহান। এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না। নিখুঁত, কোনো অভিযোগ নেই। এবং ওনার প্রশংসা করার পর আমরা ওনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকি যে উনি তা করেছেন এই জন্য।
প্রচন্ড গরম: আজ কিছু মানুষ বাইরে বসে আছেন। আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন যার জন্য এয়ারকন্ডিশন যথেষ্ট নয়, বলে ফেললেন— উফ যা গরম! কিন্তু মুসলিম হিসেবে আপনার মনে প্রথমে যা আসা উচিত সেটি হলো— আলহামদুলিল্লাহ আজ বেশ গরম, আলহামদুলিল্লাহ! এর মানে কি আপনি জানেন? আল্লাহকে ধন্যবাদ গরমের জন্য, এবং আমি আল্লাহর প্রশংসা করি গরমের জন্য। এটি ভিন্ন ধারার চিন্তা। এটি অন্যদের মত নয়।
কিছু মানুষ আছে যারা ঈশ্বর-এ বিশ্বাস করে, বিশ্বাস করুন আমি জানি। সব ধর্মের মানুষের সাথে আমার দেখা হয়। কিছু মানুষ আছে যারা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করে, কিন্তু তাদের যেটা নেই, প্রথমত তাদের যেটা নেই সেটা হলো— আলহামদুলিল্লাহ।
অসন্তুষ্টভাবে আলহামদুলিল্লাহ বলা: আর কিছু মুসলিম আছে যারা আলহামদুলিল্লাহ বুঝে না। তাই মাঝে মধ্যে তারা বলে— ‘আমি বেতন বেশি পাই না, তবে যাই হোক, আলহামদুলিল্লাহ!’ আপনি প্রকৃতপক্ষে আলহামদুলিল্লাহ বলছেন না। আপনি অভিযোগ করছেন আলহামদুলিল্লাহ বলার মধ্য দিয়ে। ‘পরিবারের সবাই কেমন আছে’, ‘এই আছে আরকি, আলহামদুলিল্লাহ।’ এই আলহামদুলিল্লাহ বলা কিন্তু সত্যিকারের আলহামদুলিল্লাহ না। আলহামদুলিল্লাহ হচ্ছে আপনার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আপনি কৃতজ্ঞ। যা কিছু ভুল ঘটছে, তার মাঝেও আপনি সেখানে ভালো কিছু খুঁজে পাবেন।
আপনি যদি গরম অনুভব করেন, অন্তত আপনি অসুস্থ তো্ বোধ করছেন না। আপনার আরো কিছু খারাপ হতে পারত। আপনি জানেন যদি আপনার গাড়ির ট্রান্সমিশন সমস্যা থাকে, অন্তত গাড়ির ইঞ্জিনে তো কোন সমস্যা নেই। আপনার অনেক কিছুই ঠিক মত চলছে।
আমরা সেই দলের মানুষ যারা আলহামদুলিল্লাহ বলি। জানেন এর মানে কী? আমরা সবসময় কৃতজ্ঞ, আমরা সবসময় ইতিবাচক। আমরা যদি আলহামদুলিল্লাহ বুঝতাম, আমরা কখনো হতাশ হতাম না, একজন মুসলিম কখনো হতাশ হতে পারে না।
ইদানিং আপনি উম্মার মধ্যে দেখতে পাবেন যে, কিছু মানুষ মুসলিমদের অবস্থার জন্য অভিযোগ করছে। যেমন ধরুন আমরা মুসলিমদের অজ্ঞতার জন্য অভিযোগ করি অথবা মুসলিমদের মাঝে দুর্নীতির ব্যাপারে অভিযোগ করি। আমরা অভিযোগ করি, অভিযোগ করি, আর অভিযোগ করি। আমি আপনাদের বলছি তিনি আল্লাহ, যিনি আমাদের অবস্থার পরিবর্তন করেন। আমাদের যা করতে হবে তা হলো, আল্লাহর দিকে ফিরে যেতে হবে আলহামদুলিল্লাহ বলে। আমাদের ইতিবাচক থাকতে হবে, ইতিবাচক দলের মানুষ হতে হবে।
আল্লাহ তা’লা তাঁর প্রতি বেশী বেশী শুকরিয়া(আলহামদুলিল্লাহ) করে তারঁ মুকাররাবীন বান্দাদের অন্তরভুক্ত আমাদের করে নিন-আমিন।
‘আলহামদুলিল্লাহ’ মিজানের পাল্লাকে ভারী করে এবং এটা সর্বোত্তম দোয়া। -তিরমিজি ও ইবনে মাজা

”রমজানের রোজার পরে মহররমের রোজ হলো সর্শ্রেসুষ্ট।যেমন ফরজ নামাজের পরে শেষ রাতের তাহাজ্জুতের নামাজ সব চেয়ে বেশী মর্যাদাসম্পন্ন।”

১লা সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১লা মহররম (চাদঁ দেখা সাপেক্ষে) হওয়ার সম্ভাবন।
মহররম মূলত: হিজরী বৎসরের প্রথম মাস,এই মাসের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়।বছরের প্রথম মাস আশুরা অত্যন্ত সম্মানিত এর রয়েছে ঐতিহাসিক তাৎপর্য্য। অনুরুপ ১০ই মহররম বা আশুরার রয়েছে অতীব গুরুত্বপূ্র্ন্ এবং সমৃদ্ধ ইতিহাস।ভুমন্ডল ও নভোমন্ডলের সৃষ্টিকুলের প্রাথমিক বিভাজনের সুচনা হয় এই আশুরায়।হয়রত আদম (আ:)এর সৃষ্টি, উত্থান, স্থিতি, পৃথিবীতে আগম সব কিছু ঘটনাই ঘটেছিল এই আশুরায়।হয়রত নূহ আ: এর নৌযানের যাত্রা আরম্ভ এবং বন্যা প্লাবনের সমাপ্তি হয়েছিল আশুরাতে।হয়রত মুসা আ: এর সমুদ্রপথে রওয়ানা হওয়ার দিনটিও ছিল এই আশুরা।
এরই ধারাবহিকতায় আল্লাহর রাসুল হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা:) আশুরায় কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার সমুহ সম্ভাবনার কথা ব্যাক্ত করেছেন। আশুরা এলে তিনি বিনয়ে বিনম্র থাকতেন এবং রোযা পালন করতেন। আশুরা শব্দটি আরবি আশারা শব্দ থেকে এসেছে এর অর্থ্ দশ আর আশুরা মানে হলো দশম। ইসলামের পরিভাষায় মহরমের দশ তারিখকে আশুরা বলে।সৃষ্টির শুরু থেকে মহরমের দশ তারিখ তথা আশুরার দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ন্ ঘটনা ঘটেছিল। ফলে আশুরার গুরুত্ব ও মাহাত্ব উত্তর উত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে নবী দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা:) এর শাহাদাত এই দিনকে বিশ্ববাসির কাছে সর্বাধিক স্মরনীয় ও বরণীয় করে রেখেছে।
আশুরার রোযা সব নবীর আমলেই ছিল। নবী করিম (সা) মক্কায় থাকতেও আশুরার রোযা পালন করতেন।হিজরতের পর মদীনায় এসে নবী করিম (সা) দেখতে পেলেন ইহুদীরাও এই দিনে রোযা রাখছে।প্রিয় নবী(সা:)তাদের এই দিনে রোযা রাখার কারন জানতে চাইলেন,জানতে পারলেন, এই দিনে মুসা (আ:)সিনাই পাহাড়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওরাত কিতাব লাভ করেন।এই দিনেই তিনি বনি ইসরাইলের ফেরআউনের জেল খানা থেকে উদ্ধার হন এবং লোহিত সাগর অতিক্রম করেন।আর ফেরআউন সেই সাগরে ডুবে মারা যায়।তাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ইহুদিরা এই দিনে রোযা রাখে।
মহানবী (সা) বললেন,মুসা (আ:) এর সংগে আমাদের সম্পর্ক্ তাদের চেয়ে বেশী ঘনিষ্ট ও অগ্রগন্য।এর পর তিনি দশই মহররম এর সংগে নয়ই মহররম এবং এগারই মহররম মিলিয়ে দুইটি রোজা রাখতে বললেন।কারন ইহুদীদের সংগে মুসলমানদের যেন কোন সাদৃশ্য না হয়ে যায়।দ্বিতীয় হিজরীতে রমজান মাসের রোযা ফরজ করা হলে,আশুরার রোজা নফল হয়ে যায়।তবে রমজানের রোজা রাখার পর,আশুরার রোজা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ন্ ও ফজিলতপূর্ন্।
এমাসের নফল রোজা ও অন্যান্য এবাদত রমজান মাস ব্যাতিত অন্য যেকোন মাস অপেক্ষা অধিক উত্তম।দশই মহররম আশুরার রোজা রাখা সুন্নত।আশুরার দিনে ও রাতে নফল নামাজ পড়া, মহররম মাসের তের ও চৌদ্দ তারিখের আইয়ামে বীজের সুন্নত রোজা,বিশ উনত্রিশ ও ত্রিশ তারিখের নফল রোজা এবং প্রতি সোম ও বৃহ:বার সুন্নত রোযা এবং এই মাসে মহররম মাসে প্রতি রাতে ১০০ বার দরুদ শরীফ এবং ৭০ বার এস্তেগফার পড়া অত্যন্ত ফজিলতের আমল।এই আমলটি রাহাতুল কুতুব নামক ইমাম রাজিন (রা:) উল্লেখ করেছেন।
আশুরার রোযা রাখার চারটি নিয়ম রয়েছে। (১) ১ থেকে ১০ তারিখ পর্ন্তুল মোট দশটি রোজা রাখা। (২) তা সম্ভব না হয়ে ৯,১০ ও ১১ তারিখ মোট তিনটি রোজা রাখা। (৩) তাও সম্ভব না হলে ৯ ও ১০ তারিখ অথবা ১০ ও ১১ তারিখ ২টি রোজা রাখা। (৪) এটাও যদি সম্ভব না হয় শুধু ১০ তারিখে একটি হলেও রোজা রাখা। যদি কেউ ১০ তারিখের রোজা রাখে এবং ৯ ও ১১ তারিখ রাখতে না পারেন তবে জোড়া মিলাবার জন্য অন্য কোন তারিখের রোজা রাখার প্রয়োজন হবে না।
হযরত কাতাদা (রা:) থেকে বর্নিত রাসুলে আকরাম (সা:)বলেন:”আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী,আল্লাহ তা’লা এর উসিলায় অতীতের এক বৎসরের গুনাহ মাফ করে দিবেন।(তিরমীজি,মসনদে আহমদ)।
হযরত আবু হোরায়রা (রা:) থেকে বর্নিত,রাসুলে করিম (সা:)বলেন,”রমজানের রোজার পরে মহররমের রোজ হলো সর্শ্রেনদষ্ট।যেমন ফরজ নামাজের পরে শেষ রাতের তাহাজ্জুতের নামাজ সব চেয়ে বেশী মর্যাদাসম্পন্ন।”
আসুন,আশুরার দিন আগে বা পরে এক দিন সহ রোজা রেখে আল্লাহর কল্যান লাভের সুযোগ গ্রহণ করি।–আমিন।

১০টি ছোট ছোট আমল কেয়ামতের দিন নেকির পাল্লাকে ভরে দিবে।

আ’মল সমূহ অতি ছোট কিন্তু নেকীর পাল্লাকে ভরিয়ে দেবে,আর সে পাল্লা কত বড় আপনারা কি জানেন ? কেয়ামতের দিন যে পাল্লা তাতে যদি সাত আসমান এবং সাত জমিন এনে ঐ পাল্লা সমূহের একটি পাল্লায় রাখা হয় তাহলে একটি পাল্লাও ভরবে না। সে বিশাল পাল্লাকে ভরিয়ে দেবে অতি ছোট ছোট দশটি আ’মল।
(১) কলেমা লা-ইলাহা ইল্লাহ :
===================
এই কলেমা ব্যাতীত মানুষের দুনিয়াতেও নিষ্কৃতি নাই আখেরাতেও নিষ্কৃতি নাই। কেয়ামতের দিন এক বান্দার কোন নেকী হবে না,সে খুবই পেরেশান হবে। তখন আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিন বলবেন:পেরেশান কেন পেরেশান হইও না।তোমার একটি আমল আমার কাছে আছে।ফেরেশতাদের নির্দশ দেয়া হবে,তারা ঐ আমলে একটি কার্ড ছোট একটি বতাকা(বতাকা অর্থ কার্ড)নিয়ে আসবে।ঐ কার্ডখানি এনে যখন মিজানের পাল্লায় রাখা হবে: এক পাশে তার গুনাহের বোঝার পাল্লা অপর পাশে তার নেকীর পাল্লা । যেখানে কোন নেকী থাকবে না। আল্লাহর নির্দশে তখন নেকীর পাল্লায় ঐ কার্ডখানি রাখা হবে- সেটা তার সমস্ত গুনাহের চাইতে ওজনে বেশী হবে। সুবহানআল্লাহ্। ওটা কিসের কার্ড জানেন ? সেটা হলো কলেমা: লা ইলাহা ইল্লাহর কার্ড। সেখানে লেখা থাকবে - লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। সেই ছোট কার্ডটি তার নেকীর পাল্লাকে ভরে দেবে। এবং আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিন নির্দশ দিবেন,তাকে জান্নাত দেয়ার জন্য। সুবহানআল্লাহ্ ।
(২) আলহামদুলিল্লাহ্ :
===============
এটাও খুব ছোট আমল,কিন্তু কেয়ামতের ময়দানে সাত আসমান সাত জমিন যে পাল্লাকে ভরতে পারে না,সে পাল্লাকে ভরিয়ে দেবে।
যে আল্লাহর ফায়সালায় রাজি হবে,আল্লাহ তাকে যে হালতে রেখেছে,তাতে সে খুশী হয়ে বলে দেয়:আলহামদুলিল্লাহ্। সে যদি গরীব হয়,তাতেও সে বলে:আলহামদুলিল্লাহ্। সে যদি অসুস্থ্য হয় তাকে যদি কেউ জিজ্ঞেস করে,আপনি কেমন আছেন ? সে বলে: আলহামদুলিল্লাহ্।সকল প্রশংসা আমার প্রভুর জন্য,আমার আল্লাহর জন্য,আমি ভাল আছি।কারন সে অন্যের তুলনায় তো ভাল আছে।
আমরা সামান্য সর্দ জ্বর হলে,সামান্য পেরেশান হলে আমরা আল্লাহর না-শুকরি করি।সেটা উচিৎ নয়। বরং সদা সবর্দা আল্লাহর প্রশংসা করতে হবে।
এক লোক মসজিদের মধ্যে নামাজ পড়তে গেয়ে সে যখন মসজিদ থেকে বের হলো,দেখতে পেল তার জুতা চুরি হয়ে গিয়েছে। সে খুবই পেরেশান হয়ে মসজিদ থেকে খালি পায়ে প্রচন্ড গরম চলে যাচ্ছিল,সে খুবই পেরেশান কিন্তু কিছু দুর গিয়ে সে দেখলো এক লোক সেও মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বের হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তার দুটি পা নেই। তখন সে শুকরিয়া আদায় করলো,আল্লাহর প্রশংসা করলো,যে আমারতো দুটি পা আছে কিন্তু এ লোকটির তো দুটি পা ও নেই।
সেজন্য আমরা সব সময় আমাদের চাইতে যে কষ্টে আছে,যে দু:খে আছে,যে পেরেশানীতে আছে,তার কথা যদি আমরা খেয়াল করি তাদের তুলনায় আল্লাহ আমাদেরকে সুস্থ্য রেখেছেন ভাল রেখেছেন। সে কথা যদি আপনি খেয়াল করেন তাহলে,আপনার সকল দু:খ পেরেশানী দুর হয়ে যাবে।এবং আপনি বলতে পারবেন : আলহামদুলিল্লাহ্।হাদিস শরীফে আছে যে সন্তুষ্ট চিত্তে আলহামদুলিল্লাহ্ বলে কেয়ামতের দিন দুটি পাল্লা নেকী দ্বারা ভরে দেয়া হবে।
(৩) সুবহান আল্লাহি ওয়া বিহামদীহি সুবহান আল্লাহিল আজিম : আমলটি খুব ছোট কিন্তু এর দ্বারাও নেকীর পাল্লা ভারী হয়ে যাবে।
এ দুটি কালিমা আল্লাহর খুব প্রিয়,জিহ্বার জন্য,মুখে উচ্চারনের জন্য এটি খুবই হালকা।কিন্তু মিজানের পাল্লায় এটি খুবই ভারী তা হলো:সুবহান আল্লাহি ওয়া বিহামদীহি সুবহান আল্লাহিল আজিম। খুব বেশী বেশী এই জিকিরটি করতে থাকুন তা আপনার নেকীর পাল্লাকে ভারী করে দেবে।
(৪) সৎচরিত্র : রাসুল (সা:) এরশাদ করেছেন,সৎচরিত্র কেয়ামতের দিন সবচেয়ে ভারী আমল হবে। আমাদের প্রিয় নবী (সা:) সৎচরিত্রের তিনটি সুত্র বলেছেন।
সৎ চরিত্রে সুত্র হলো:
ক.হালাল তালাশ করা,
খ.হারাম থেকে বেঁচে থাকা,
গ.ঘরের লোকদের প্রতি উদার হওয়া:আপনি ঘরের লোকদের জন্য খরচ করাতে,তাদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে,কাপড় চোপড়ের ব্যাপারে,তাদের যেকোন প্রয়োজনের ব্যাপারে,হালাল প্রয়োজনের ব্যাপারে উদার হওয়া।মুক্ত হস্তে তাদের জন্য খরচ করা।
এই তিন টি সুত্র আপনি মনে রাখবেন, তাহলে আপনি সৎচরিত্রবান হিসাবে গন্য হবেন। এবং এই আমলটি আপনার মিজানের পাল্লাকে ভরিয়ে দেবে।
(৫)রাসুল (সা:) বলেন,অনেক বড় সফল ঐ ব্যাক্তি, যার মধ্যে পাচঁটি জিনিস এসে গেছে,যা তার নেকীর পাল্লাকে ভরিয়ে দেবে:
১. লা ইলাহা ইল্লাহ,
২.সুবহানআল্লাহ,
৩.আলহামদুলিল্লাহ,
৪.আল্লাহু আকবার,
৫.যার নেককার একজন সন্তান মৃত্যু বরন করেছে এবং সে ধৈর্য্য ধারণ করেছে।
-এটা এত বড় আমল যে সে জান্নাতে চলে যাবে।
(৬) যে ব্যাক্তি নিজের মু’মিন ভাই বোনদের জন্য দো’য়া করেন/অর্থাৎ অন্যদের জন্য দো’য়া করবেন:আমরা শুধু নিজের জন্য দো’য়া করি,কিন্তু যে ব্যাক্তি অপরের জন্য দো’য়া করবেন-তার নেকীর পাল্লা ভারী হয়ে যাবে।নবী করিম (সা:) বলেন:”যে ব্যাক্তি শুধু এতটুকু বলবে, আল্লাহুম মাগফিরলীল মু’মীনিন ওয়াল মুমিনাত-হে আল্লাহ , তুমি মুমিন নরনারীদের ক্ষমা করে দাও-তার নেকীর পাল্লা ভারী হয়ে যাবে।”এবং এই আমলটি তার নেকীর পাল্লাকে ভারী করে দেবে-যা তার জান্নাতে যাওয়ার জন্য সহায়ক হবে।
(৭) জানাযায় অংশ গ্রহণ করা: নবী করিম (সা:) এরশাদ করেন,”যে জানাজায় অংশ গ্রহণ করে,তার আমল নামায় ওহুদ পাড়ারের সমপরিমান নেকী দেয়া হয়।আর যে জানাজার পরে দাফন সহ সেখানে অবস্থান করে,দাফন কার্য্য সম্পন্ন করে আসে তার জন্য দুইটা ওহুদ পাহাড়ের সমপরিমান নেকী দেয়া হয়।”
আপনারা কি জানেন ওহুদ পাহাড়ের ওজন কতটুকু ? এটা হিসাব করা সম্ভব নয়।
মানুষকে দেখানো নিয়তে নয়,আপনার কোন আত্নীয় মারা গেছে,আপনি যদি না যান তাহলে ঐ আত্নীয়ের লোকজন আপনার উপর রাগ করবেন আপনার সাথে মনোমালিন্য হবে।তাদেরকে খুশী করার জন্য এই নিয়তে নয়,বরং আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিনকে সন্তুষ্ট করার জন্য যদি আপনি জানাযায় অংশ গ্রহণ করেন,তাহলে আপনার নেকীর পাল্লা ভরে যাবে।
(৮) যে ব্যাক্তি একটি খেজুরের সমান সদ্কা করা : যে ব্যাক্তি একটি খেজুরের সমপরিমান সদকা করবে,আল্লাহ সে সদকাকে লালন পালন করতে করতে পাহাড়ের সমান করে দেবেন।কেয়ামতের দিন সে নেকীর পাহাড় যখন,তার কাছে নিয়ে আসা হবে,সে আশ্চার্য হয়ে যাবে। সে বলবে, ইয়া রাব্বুল আ’লামিন এটাতো আমার সদকা নয়,আমিতো এত সদকা করি নাই।তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলবেন,হে বান্দা, তোমার মনে আছে ? ছোট একটা খেজুর সদকা করেছ। সেই ছোট্র খেজুরটাকে লালন পালন করতে করতে আজ আমি পাহাড় সমান করেছি।এটা তোমারই সদকা আমি লালন পালন করে এত বড় করেছি। সুতরাং আল্লাহর রাস্তায় একটা খেজুরও যদি খরচ করেন সেটা আপনার নেকীর পাল্লাকে পাহাড় সমান ভারী করে দেবে।
(৯) আল্লাহর পক্ষে রাগ করা : রাগ দু’প্রকার:নিজের জন্য রাগ এবং আল্লাহর পক্ষে রাগ। আজ কাল আমাদের নিজের জন্য মনের মধ্যে রাগ আসে। আল্লাহর পেক্ষে রাগ আসে না। যেমন আপনার সন্তান স্কুলের পড়া রেডি করে নাই বা ঘরের দরকারী কোন বস্তু নষ্ট করে ফেলেছে।আপনি তখন রাগান্বিত হয়ে যান:রাগ করে,বকা দেন,মারেন। আপনার সন্তান যদি স্কুলে বা কোচিং এ যেতে না চায় আপনার রাগ লাগে।পড়া লেখা না করলে আপনার রাগ লাগে।কিন্তু আপনার সন্তান যদি নামাজ না পড়ে তাতে আপনার একটুও রাগ আসে না। অথচ আপনার আমার উচিৎ হলো,আল্লাহর হক নষ্ট করলে তাতে বেশী রাগ আসা।যদি এমন হয়,আল্লাহর পক্ষে রাগ করা হয়,তাহলে আখেরাতে নেকীর পাল্লা ভরে যাবে।
(১০) দ্বীনের দাওয়াত: রাসুল (সা): এর দ্বীন ধর্মের দাওয়াতকে প্রচার করা বিস্তার করা,যা কেয়ামতের দিন নেকীর পাল্লাকে ভরিয়ে দেবে।
আসুন,এসব আমল আমরা নিজেরা করি এবং অন্যরাও যেন করতে পারে,সবাইকে জানিয়ে দিয়ে নেকীর পাল্লাকে ভারী করি-অমিন।

রিজিক-রুজি-রোজগার নিয়ে যত টেনশন তার ১০০০ ভাগের ১ ভাগ টেনশনও যদি আল্লাহ ভয়ে ভীত হয়ে মানুষ করতো,তবে এক এক জন অলি আল্লাহ হয়ে যেত। রিজিকের টেনশন দুর করার আমল:

বড়ই আফসোসের বিষয় হলো রিজিকের জন্য বর্তমান যুগে যতবেশী মানুষ রাতদিন পেরেশানীতে আছে বিগত কোন যুগে কোন জামানায় এমনটি ছিল না। আল্লাহ তা’য়ালা প্রত্যেক প্রানীর রিজিকের জিম্মাদার তবুও মানুষ এই রিজিকের পিছনে সবচেয়ে বেশী সময় ব্যায় করে।এই রিজিকের জন্য আল্লাহর হক ভুলে যায়। আল্লাহর এবাদত ভুলে যায়।মানুষের হক ভুলে যায়।যত ধরনের অপরাধ আছে তা করতে দ্বিধা বোধ করে না।অধৈর্য্য হয়ে এই রিজিকের জন্য সব ধরনের হারাম পন্থা অবলম্বন করে।দারিদ্রতাকে মানুষ যেভাবে ভয় পায়,টাকা পয়সা হাতছাড়া হয়ে যাবে,গরীব হয়ে যাবে এই ভয় মানুষকে যেভাবে আতংকিত করে,তার হাজার ভাগের যদি একভাগও মানুষ আল্লাহকে ভয় পেত,আল্লাহকে ভয় করতো তাহলে এক এক জন আল্লাহর অলি হয়ে যেত।
এক সাহাবীর মাধ্যমে বিশ্বনবী (সা:) এর নব্যুয়তীর জবান থেকে এই দো’য়াটি পাওয়া যায়। এই দো’য়াটির আমল করলে আপনার কাছে এত বেশী রিজিক আসবে,কোথায় রাখবেন দিশা পাবেন না।
এবার আসুন,হাদিসটি শুনি এবং দোয়াটি মুখস্ত করে ফেলি। একজন সাহাবী রাসুল (সা:) এর কাছে এসে বললেন ”ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা:) দুনিয়া আমার প্রতি পৃষ্ট প্রদর্শণ করেছে,
তখন নবী করিম (সা:) বললেন,তোমার কি ঐ তাসবীহ স্মরণ নেই যে তাসবীহ ফেরেশতা এবং মাখলুকের, যার বরকরে রুজি রোজগার প্রদান করা হয়।যখন সুবেহ সাদিক উদিত হয়, তখন এই তসবিহটি এই দোয়াটি ১০০ বার পাঠ করবে।:-
সুবহান আল্লাহি ওয়া বিহামদীহি, সুবহান আল্লাহিল আজিম,আসতাগফিরুল্লাহ,
-দুনিয়া তোমার নিকট অপমানিত হয়ে চলে আসবে।” (আল হাসাইসুল কোবরা ২য় খন্ড ২৯৯ পৃষ্ঠা)।
ঐ সাহাবী চলে গেলেন,কিছুদিন পুনরায় হাজির হয়ে আরজ করলেন,ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা:) দুনিয়া আমার নিকট এত বেশী আসছে আমি হতবাক কোথায় লুটাবো-কোথায় রাখবো আমি দিশা পাচ্ছি না।
বি:দ্র:পাঁচ ওয়াক্ত সালাত (নামাজ) আদায় করতে হবে।

সঠিক উচ্চারনে সালাম প্রদান না করলে অর্থ ভিন্ন হয়ে যায় এবং গুনাহ হয়:

ইসলামী অভিবাদন হলো اسلام عليكم বলা। বাংলা উচ্চারণ হলো “আসসালামু ‘আলাইকুম”। এর অর্থ “আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।”
সালাম হলো ঈমানের অঙ্গ এবং জান্নাতে প্রবেশের একটি রাস্তা।
একজন মুসলমান অন্য একজন মুসলমানের সাথে সাক্ষাৎ করলে সালাম দিয়েই কথোপকথন শুরু করেন। তবে অত্যান্ত দুঃখজনক ব্যাপার হল বেখেয়ালে বা তাড়াহুড়া করতে গিয়ে অনেক সময় আমরা সঠিক উচ্চারণে সালাম দেইনা।
আমরা প্রতিদিন অনেককে এমনভাবে সালাম দিতে শুনি: স্লামালাইকুম, সালামালাইকুম, আস্লামালাইকুম, আস্লাআলাইকুম, সেলামালাইকুম, ইস্লামালাইকুম, অয়ালাইকুম।
আবার উত্তর দেওয়ার সময়ও ভুলভাবে উত্তর দিতে শুনি: অলাইকুম সালাম, অলাইকুম আসসালাম, অলাইকুম ইত্যাদি।
ইসলামের শেআর ও প্রতীক পর্যায়ের একটি আমল হচ্ছে সালাম। এটি একটি দুআ। আর তাই এর সহীহ উচ্চারণের ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া বেশ জরুরী। বিশুদ্ধ উচ্চারণ না হলে অনেক সময় কথার অর্থ বদলে যায়। আর তাই, সঠিক অর্থ বজায় রাখতে বিশুদ্ধ উচ্চারণ আবশ্যক।
সালাম বিষয়ে ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত,হুজুর ( সা.) এর দরবারে এক লোক এসে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে বসে পড়ল। হুজুর ( সা.) তার উত্তর দিয়ে বললেন, সে দশটি নেকি পেয়েছে। তারপর আরেকজন এসে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ’ বলে বসে গেল। হুজুর ( সা.) তার উত্তর দিয়ে বললেন, সে বিশটি নেকি পেয়েছে। অতঃপর আরেকজন লোক এসে ‘আসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’ পর্যন্ত বলে বসে গেল। রাসূল(সা.) তার উত্তর দিয়ে বললেন, সে ত্রিশ নেকি পেয়েছে। –আবু দাউদ ৫১৯৫, তিরমিজি ২৬৯০
সালামের জবাব উত্তম অথবা একইরকম জবাব দেওয়া:
=======================================
আল্লাহ আমাদের আদেশ করেছেন অভিবাদনের জবাব যেন তার চেয়ে সুন্দরভাবে অথবা সমান পরিমাণে দেই। তিনি বলেন,
“যখন তোমাদেরকে অভিবাদন করা হয়, তোমরাও অভিবাদন জানাও তারচেয়ে উত্তমভাবে অথবা তারই মতো করে ফিরিয়ে দাও।” [সূরা নিসা (৪):৮৬]
বেশিরভাগ আলেমগণের মতে
“আসসালামু ‘আলাইকুম” এর জবাবে বলা উচিত “ওয়া’আলাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ”।
“আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ”র জবাবে বলতে হবে “ওয়া’আলাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”।
“আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”র জবাবে এর চেয়ে উচ্চস্বরে ও আনন্দিত স্বরে বলতে হবে “ওয়া’আলাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”।
সর্বোপরি অপর মুসলিম ভাইকে সালাম দেওয়া আমাদের দায়িত্ব আর সালামের জবাব দেওয়া আমাদের উপর তাদের অধিকার।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “এক মুসলিমের প্রতি অপর মুসলিমের পাঁচটি অধিকার রয়েছে। সালামের জবাব দেওয়া, অসুস্থকে দেখতে যাওয়া, জানাযার সাথে শরিক হওয়া, দাওয়াত কবুল করা ও হাঁচি দিলে আলহামদুলিল্লাহ বলা।” (রিয়াদ্বুস সলিহীন, ৭ম খণ্ড)
মোটকথা হলো, সালাম ইসলামের একটি চিহ্ন এবং এটি মুসলিমদের মধ্যকার ভ্রাতৃত্বকে মজবুত করে। আসুন সালামের আদবসমূহ ঠিক রাখার মাধ্যমে এর সর্বোচ্চ ফযিলত আদায় করে নেই।

সুরা ইখলাস পাঠের ফজিলত:

সূরা ইখলাসের উপকারীতা ও ফজিলত সম্পর্কে মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ ও নাসায়ীতে একাধিক হাদিস রয়েছে। হজরত ওকবা ইবনে আমের বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল (স.) বলেন, আমি তোমাদেরকে এমন তিনটি সূরা বলছি, যা তওরাত, ইঞ্জিল, জবুর এবং কোরআন সব কিতাবেই অবতীর্ণ হযেছে।
রাতে তোমরা ততক্ষণ নিদ্রা যেয়ো না, যতক্ষণ সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস না পাঠ কর। ওকবা বলেন, সেদিন থেকে আমি কখনও এ আমল পরিত্যাগ করিনি (ইবনে কাসীর)। তা ছাড়া আবু দাউদ, তিরমিজী এবং নাসায়ীর এক দীর্ঘ বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (স.) বলেন, যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যায় সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পাট করে তা তাকে বালা-মসিবত থেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট হয় (ইবনে কাসীর)।
সুরা ইখলাস মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ আল কুরআনের ১১২ নম্বর সূরা, এর আয়াত সংখ্যা ৪টি এবং এর রূকুর সংখ্যা ১টি। আল ইখলাস সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এই সূরাটিকে ইসলামের শেষ পয়গম্বর মুহাম্মদ (সা:) বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে ব্যাখ্যা করেছেন।
তাৎপর্যের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, এই আয়াতে আল্লাহ্‌র অস্তিত্ব ও সত্তার সবচেয়ে সুন্দর ব্যাখ্যা রয়েছে। এটি কুরআনের অন্যতম ছোট একটি সূরা হিসেবেও বিবেচিত হয়ে থাকে। এই সূরাটি কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান বলা হয়।
১. সুরা ইখলাস কুরআন শরীফের সবচেয়ে সম্মানিত সুরার মধ্যে একটি। যে ব্যক্তি একবার সূরা ইখলাস পাঠ করবে সেই ব্যক্তি কুরআনুল কারীম এক তৃতীয়াংশ পাঠ করার সওয়াব লাভ করবে।
২. যে ব্যক্তি দশবার পাঠ করবে আল্লাহ্ তায়ালা নিজ কুদরতি হাতে জান্নাতের মধ্যে বিশেষ মর্যাদাশীল একটি মহল তৈরি করবেন।
৩. যে ব্যক্তি অধিক পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দিবেন।
৪. যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণ পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তাঁর লাশ বহন করার জন্য হয়রত জিবরাঈল (আঃ) এর সাথে সত্তর হাজার ফেরেশতা প্রেরন করবেন। সেই ফেরেশতারা তাঁর লাশ বহন করবে এবং জানাজায় শরিক হবে।
সূরা এখলাস দৈনিক ২০০ বার অজুর সাথে পড়লে ১০টি ফায়দা !!
দৈনিক ২০০ বার অজুর সাথে পড়লে ১০টি ফায়দা।
১) আল্লাহ তায়ালা তার রাগের ৩০০ দরজা বন্ধ করে দিবেন।
২) রহমতের ৩০ দরজা খুলবেন।
৩) রিজিকের ৩০০ দরজা খুলবেন।
৪) মেহেনত ছাড়া গায়েব থেকে রিজিক পৌছাবেন।
৫) আল্লাহ তায়ালা নিজের এলেম থেকে এলেম দিবেন।আপন ছবর থেকে ছবর দিবেন।আপন বুঝথেকে বুঝ দিবেন।
৬) ৬৬বার কুরআন খতম করার ছাওয়াব দিবেন।
৭) ৫০ বছরের গুনাহ মাফ করবেন।
৮) জান্নাতের মধ্যে ২০টি মহল দিবেন, যেগুলো ইয়াকুত মার্জান ও জমজদের তৈরী এবং প্রত্যেক মহলের ৭০ হজার দরজা হবে।
৯) ২০০০রাকাত নফল পড়ার ছাওয়াব দিবেন।
১০) যখন তিনি মারা যাবেন ১,১০,০০০ ফেরেশ্তা তার যানাযায় শরিক হবেন।
সুবহানাল্লাহ
আল্লাহ আমাদের জানার এবং বুঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন।

ফেরেশতারা স্বর্ণের কলম দিয়ে আপনার নাম লিপিবদ্ধ করবে তা হলো:দরুদ শরীফ। বৃহ:বার আসর থেকে শুক্রবার আসর পর্যন্ত এ আমলটি করতে হয়।

হযরত ওকবা বিন আমের (রা:) বর্ননা করেন নবী করিম (সা:) এরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালা খাস নুর দ্বারা স্পেশাল নুর দিয়ে কিছু ফেরেশতা সৃষ্টি করেছেন যাদের ডিউটি হলো যারা জুমার রাত ও জুমার দিন আমার উপর দরুদ পাঠ করে তা লিপিবদ্ধ করা, (তাদের আর কোন ডিউটি নাই)।
তারা শুধুমাত্র বৃহস্পতিবার সন্ধায় দুনিয়ার জমিনে আসে শুক্রবার সূর্য্যাস্ত পর্য্ন্ত দুনিয়ার জমিনে বিচরন করে) এসব ফেরেশতা সাথে করে স্বর্ণের কলম নিয়ে আসেন আর সে কলমের দোয়াতও নিয়ে আসেন যে কালি রুপার কালি এবং ফেরেশতারা সাথে করে স্বর্নের বা নুরের রেজেষ্ট্রার বুক নিয়ে আসেন(লিখার জন্য নোট বুক সাথে করে নিয়ে আসেন)।
তারা সে রেজিষ্ট্রার বুকে নবী করিম(সা:) এর আমার উপর দরুদ ও সালাম ছাড়া আর কিছুই লিখেন না। তারা তাতে কে বা কারা দরুদ পাঠ করেছে তাদের নাম ঠিকানা লিপিবদ্ধ করে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্য্যন্ত কে কতবার দরুদ পাঠ করেছে তাও লিপিবদ্ধ করে, শুক্রবার সন্ধায় তারা যখন দুনিয়া থেকে চলে যায় তখন তারা সে দরুদ এর রেজিষ্ট্রার কপি এক কপি আরশে মুয়াল্লায় নিয়ে যায়, এক কপি আমার সমিয়ে পেশ করে।
দরুদে ইব্রাহিম:
আল্লাহুম্মা ছাল্লিআলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ। আল্লাহুম্মা বারিক আলা মুহাম্মাদিও ওয়া আলাআলি মুহাম্মাঁদিন কামা বারকতা আলা ইব্রাহীমা ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ।
আসুন আমরা প্রত্যেক বৃহস্পতিবার সন্ধা থেকে পরের দিন শুক্রবার সন্ধা পর্যন্ত আমাদের প্রিয় নবী সা: এর উপর বেশী বেশী দরুদ পাঠ করি এবং নিজেদের নাম ফেরেশতাদের নুরানী রেজিষ্ট্রার বুকে লিপিবদ্ধ করিয়ে নিই।

অভাব দুর করার আমল:

লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ্ ওয়ালা মালজায়া ওয়ালা মানজায়া মিনাল্লাহে ইল্লা ইলাইহি।
বর্তমানে মুসিবত ছাড়া পেরেশানী ছাড়া লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল।অনেক লোক আর্থিক পেরেশানীর স্বীকার হল।তাদের অন্তরে সদা অভাব অনটনের ভয় থাকে । অভাব থেকে বাঁচার জন্য তারা সারাদিন রুজি রোজগারের পেছনে ভাগতে থাকে দৌড়াতে থাকে।
আবু নুয়াইম এর রেওয়াইত ইবনে আবি শাইব ঐ হাদসটি লিখেছেন।নবী করিম (সা:) এরশাদ করেছেন,যে ব্যাক্তি এই দো’য়াটি পড়বে,আল্লাহ তার থেকে ৭০টি মুসিবত দুর করে দেবেন।
আর সে ৭০টি মুসিবতের মধ্যে সবচেয়ে ছোট্র যে মুসিবত তা হলো: আভাব-অনটন।
لاحول ولاقوة الا بالله ولاملجا ولامنجا من الله الا اليه
বাংলা উচ্চারণ : লা হাউলা ওয়া লা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহি ওয়ালা মালজাআ ওয়ালা মানজাআ মিনাল্লাহি ইল্লাহ ইলাইহি। দুআটি মুখ¯’ থাকলে তো ভালো। না থাকলে মুখ¯’ করে নিন। নিয়মিত পাঠ করুন। সব রকম সমস্যা থেকে নাজাত পাবেন, ইনশাআল্লাহ।
দুঃশ্চিন্তাগ্রস্তদের জন্য সান্তনা : কানযুল উম্মালে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি ইয়াকিন ও দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এই আয়াতটি পাঠ করবে, আল্লাহ তায়ালা তার দুঃশ্চিন্তাগ্রস্ত হৃদয়কে প্রশান্তি দান করবেন। لا إِلَهَ إِلا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ এখানে ইয়াকিন ও দৃঢ় বিশ্বাসের শর্তারোপ করা হয়েছে। কারো অন্তরে এ ব্যাপারে সন্দেহ থাকলে সে সুফল পাবে না।
বি:দ্র: পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে।

প্রশান্তি প্রাপ্তি এবং মনের দু:খ পেরেশানী দুর করার দোয়া:

লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জোয়ালেমিন।
অনেক সময় মানুষ দু:খী হয় আর চিন্তা করে আমি একা মানুষ আমার কোন বিপদ আপদের সংগী নেই।মা-বাবা মৃত্যু বরণ করেছে , কার কাছে যাবো ? কার কাছে দু:খ বুঝাবো ? তাদের জন্য নবী করিম (সা:) এরশাদ করেন, কানজুল উম্মালের হাদিস, কুরআনের একটি আয়াত তিন বার অত্যন্ত একিনের সাথে বিশ্বাসের সাথে যদি পড়ে,তাহলে আল্লাহ তা’য়ালা দু:খ ভারাক্রান্ত হ্রদয়ে প্রশান্তি নাজিল করবেন।
এই ছোট আয়াতটি তিন বার একিনের সাথে পাঠ করতে হবে।
”লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুন্তু মিনাজ জোয়ালেমিন।”
বি:দ্র: পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে।

জুমার দিনের ১৫টি সুন্নত:

জুমার দিনের ১৫টি সুন্নত:
==================
(১)ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করা।
(২)মিস্ওয়াক্ করা।
(৩)তেল মালিশ করা(জায়তুনের তেল):বিশ্ব নবী জায়তুনের তেল চুলে এবং দাড়িতে দিতেন।
(৪)আতর-সুগন্ধি ব্যাবহার করা।
(৫)সুন্দর জামা পরিধান করা।
(৬)বেশী বেশী দরুদ পড়া।
(৭)সুরাতুল কাহাফ তিলাওয়াত করা।
(৮)মসজিদে আগে আগে যাওয়া।
(৯)মানুষের ঘাড় ডিংগিয়ে সামনে না যাওয়া।
(১০)মসজিদে প্রবেশ করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা সুন্নাহ।
(১১)চুপ থেকে খুতবা শোনা।
(১৩)হেটে হেটে মসজিদে যাওয়া সুন্নাহ।
(১৪)ঘুম আসলে জায়গা পরিবর্তন করে বসা অথবা চোখে পানির ঝাপটা দেয়া।
(১৫)মাগরীরেবর আগে আসরের পরে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়।


যে এস্তেগফারের সাথে আঠার মতো লেগে থাকে সে জীবনে পাঁচটি জিনিস পায়।



আসতাগফিরুল্লাহ,আসতাগফিরুল্লাহ,আসতাগফিরুল্লাহ।
========================================
(১) সকল প্রকার বিপদ আপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়:
সকল বিপদ থেকে একমাত্র আল্লাহই উদ্ধার করতে পারে।আমাদের জীবনে অনেক বিপদ আপদ আছে, কত বিপদ ? কত ধরনের বিপদ ? যেকোস সময় দুর্ঘটনা হতে পারে রোড এক্সডেন্ট। যেকোন সময় গুম হয়ে যেতে পারেন। আপনারে খুজেঁ পাবে না আপনার স্বজনরা। যেকোন সময় ক্রসফায়ারের মধ্যে পড়তে পারেন। যেকোন সময় বজ্রপাতে আপনি নিহত হতে পারেন। ভমিকম্পের মাঝখানে পড়তে পারেন।দুইজন কোবাকুবি লাগছে আপনি মাঝখানে,পরতে পারেন।
এরকম সকল প্রকার বিপদ থেকে তাকে রক্ষা করবেন কে ? এক মাত্র আল্লাহ।যদি এস্তেগফারের সাথে আঠার মতো লেগে থাকা যায়।
(২) দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়:
যে সব সময় আঠার মতো এস্তেগফারের সাথে লেগে থাকে আল্লাহ তাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবেন।তার কোন টেনশন থাকবে না।আমাদের জীবন পুরাটাই টেনশন:জীবন নিয়ে টেনশন, মরণ নিয়ে টেনশন,ক্যারিয়ার নিয়ে টেনশন,বাড়িভাড়ার টেনশন,বিদ্যুৎ বিলের দাম বেড়ে যাচ্ছে টেনশন,ঘরের মধ্যে শান্তি নাই টেনশন,দ্রব্যের দাম বাড়তেছে বেতন কমতেছে টেনশন। এই টেনশন থেকে আপনাকে আমাকে মুক্ত রাখবে কে ? আল্লাহ।
(৩) রিজিকের ব্যাবস্থ্যা হবে:
এমন জায়গা থেকে আল্লাহ আপনার জন্য রিজিকের ব্যাবস্থ্যা করে দেবেন আপনি কল্পনাই করতে পারবেন না।রিজিক দেয়ার মালিক কে ? আল্লাহ। কেউ যেটা পারে না,পারে কে ? আল্লাহ। আপনি হিসাবই করেন নাই যে এখান থেকে আমি কিছু রিজিক পাবো,কিন্তু আল্লাহ ব্যাবস্থা করে দিয়েছেন-সুবহানআল্লাহ।
(৪) আল্লাহর কোন শাস্তি আপনার উপর আসবে না:
যতক্ষন এস্তেগফারের সাথে আঠার মতো লেগে থাকবেন,আল্লাহর কোন শাস্তি আপনার উপর আসবে না।যতক্ষন আপনি এস্তেগফার পড়বেন,আল্লাহর আজাব আপনাকে পাকরাও করবে না।
(৫) আল্লাহ আপনাকে মুস্তাজাবুদ্ দাওয়া হিসাবে করুল করে নেবেন: মুস্তাজাবুদ্ দাওয়া মানে এমন ব্যাক্তি,যেই ব্যাক্তি দো’য়া করা মাত্র আল্লাহ তার দো’য়া কবুল করে নেন।
সুতরাং আসুন,সব সময় পড়ি : আসতাগফিরুল্লাহ্ ।
হে আল্লাহ,তুমি আমাদের মাফ করো-আমিন।

Wednesday, August 28, 2019

সঠিক উচ্চারনে সালাম প্রদান না করলে অর্থ ভিন্ন হয়ে যায় এবং গুনাহ হয়।



ইসলামী অভিবাদন হলো اسلام عليكم বলা। বাংলা উচ্চারণ হলো “আসসালামু ‘আলাইকুম”। এর অর্থ “আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।”
সালাম হলো ঈমানের অঙ্গ এবং জান্নাতে প্রবেশের একটি রাস্তা।

একজন মুসলমান অন্য একজন মুসলমানের সাথে সাক্ষাৎ করলে সালাম দিয়েই কথোপকথন শুরু করেন। তবে অত্যান্ত দুঃখজনক ব্যাপার হল বেখেয়ালে বা তাড়াহুড়া করতে গিয়ে অনেক সময় আমরা সঠিক উচ্চারণে সালাম দেইনা।

আমরা প্রতিদিন অনেককে এমনভাবে সালাম দিতে শুনি: স্লামালাইকুম, সালামালাইকুম, আস্লামালাইকুম, আস্লাআলাইকুম, সেলামালাইকুম, ইস্লামালাইকুম, অয়ালাইকুম।
আবার উত্তর দেওয়ার সময়ও ভুলভাবে উত্তর দিতে শুনি: অলাইকুম সালাম, অলাইকুম আসসালাম, অলাইকুম ইত্যাদি।

ইসলামের শেআর ও প্রতীক পর্যায়ের একটি আমল হচ্ছে সালাম। এটি একটি দুআ। আর তাই এর সহীহ উচ্চারণের ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া বেশ জরুরী। বিশুদ্ধ উচ্চারণ না হলে অনেক সময় কথার অর্থ বদলে যায়। আর তাই, সঠিক অর্থ বজায় রাখতে বিশুদ্ধ উচ্চারণ আবশ্যক।

সালাম বিষয়ে ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত,হুজুর ( সা.) এর দরবারে এক লোক এসে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে বসে পড়ল। হুজুর ( সা.) তার উত্তর দিয়ে বললেন, সে দশটি নেকি পেয়েছে। তারপর আরেকজন এসে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ’ বলে বসে গেল। হুজুর ( সা.) তার উত্তর দিয়ে বললেন, সে বিশটি নেকি পেয়েছে। অতঃপর আরেকজন লোক এসে ‘আসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু’ পর্যন্ত বলে বসে গেল। রাসূল(সা.) তার উত্তর দিয়ে বললেন, সে ত্রিশ নেকি পেয়েছে। –আবু দাউদ ৫১৯৫, তিরমিজি ২৬৯০
সালামের জবাব উত্তম অথবা একইরকম জবাব দেওয়া:
=======================================
আল্লাহ আমাদের আদেশ করেছেন অভিবাদনের জবাব যেন তার চেয়ে সুন্দরভাবে অথবা সমান পরিমাণে দেই। তিনি বলেন,
“যখন তোমাদেরকে অভিবাদন করা হয়, তোমরাও অভিবাদন জানাও তারচেয়ে উত্তমভাবে অথবা তারই মতো করে ফিরিয়ে দাও।” [সূরা নিসা (৪):৮৬]

বেশিরভাগ আলেমগণের মতে 
“আসসালামু ‘আলাইকুম” এর জবাবে বলা উচিত “ওয়া’আলাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ”।
“আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ”র জবাবে বলতে হবে “ওয়া’আলাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”।
“আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”র জবাবে এর চেয়ে উচ্চস্বরে ও আনন্দিত স্বরে বলতে হবে “ওয়া’আলাইকুমুসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু”।

সর্বোপরি অপর মুসলিম ভাইকে সালাম দেওয়া আমাদের দায়িত্ব আর সালামের জবাব দেওয়া আমাদের উপর তাদের অধিকার।
আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “এক মুসলিমের প্রতি অপর মুসলিমের পাঁচটি অধিকার রয়েছে। সালামের জবাব দেওয়া, অসুস্থকে দেখতে যাওয়া, জানাযার সাথে শরিক হওয়া, দাওয়াত কবুল করা ও হাঁচি দিলে আলহামদুলিল্লাহ বলা।” (রিয়াদ্বুস সলিহীন, ৭ম খণ্ড)

মোটকথা হলো, সালাম ইসলামের একটি চিহ্ন এবং এটি মুসলিমদের মধ্যকার ভ্রাতৃত্বকে মজবুত করে। আসুন সালামের আদবসমূহ ঠিক রাখার মাধ্যমে এর সর্বোচ্চ ফযিলত আদায় করে নেই।

Tuesday, August 27, 2019

”রমজানের রোজার পরে মহররমের রোজ হলো সর্শ্রেসুষ্ট।যেমন ফরজ নামাজের পরে শেষ রাতের তাহাজ্জুতের নামাজ সব চেয়ে বেশী মর্যাদাসম্পন্ন।”

১লা সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১লা মহররম (চাদঁ দেখা সাপেক্ষে) হওয়ার সম্ভাবন।

মহররম মূলত: হিজরী বৎসরের প্রথম মাস,এই মাসের ১০ তারিখকে আশুরা বলা হয়।বছরের প্রথম মাস আশুরা অত্যন্ত সম্মানিত এর রয়েছে ঐতিহাসিক তাৎপর্য্য। অনুরুপ ১০ই মহররম বা আশুরার রয়েছে অতীব গুরুত্বপূ্র্ন্ এবং সমৃদ্ধ ইতিহাস।ভুমন্ডল ও নভোমন্ডলের সৃষ্টিকুলের প্রাথমিক বিভাজনের সুচনা হয় এই আশুরায়।হয়রত আদম (আ:)এর সৃষ্টি, উত্থান, স্থিতি, পৃথিবীতে আগম সব কিছু ঘটনাই ঘটেছিল এই আশুরায়।হয়রত নূহ আ: এর নৌযানের যাত্রা আরম্ভ এবং বন্যা প্লাবনের সমাপ্তি হয়েছিল আশুরাতে।হয়রত মুসা আ: এর সমুদ্রপথে রওয়ানা হওয়ার দিনটিও ছিল এই আশুরা।

এরই ধারাবহিকতায় আল্লাহর রাসুল হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা:) আশুরায় কেয়ামত সংঘটিত হওয়ার সমুহ সম্ভাবনার কথা ব্যাক্ত করেছেন। আশুরা এলে তিনি বিনয়ে বিনম্র থাকতেন এবং রোযা পালন করতেন। আশুরা শব্দটি আরবি আশারা শব্দ থেকে এসেছে এর অর্থ্ দশ আর আশুরা মানে হলো দশম। ইসলামের পরিভাষায় মহরমের দশ তারিখকে আশুরা বলে।সৃষ্টির শুরু থেকে মহরমের দশ তারিখ তথা আশুরার দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ন্ ঘটনা ঘটেছিল। ফলে আশুরার গুরুত্ব ও মাহাত্ব উত্তর উত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। ফোরাত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে নবী দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসাইন (রা:) এর শাহাদাত এই দিনকে বিশ্ববাসির কাছে সর্বাধিক স্মরনীয় ও বরণীয় করে রেখেছে।

আশুরার রোযা সব নবীর আমলেই ছিল। নবী করিম (সা) মক্কায় থাকতেও আশুরার রোযা পালন করতেন।হিজরতের পর মদীনায় এসে নবী করিম (সা) দেখতে পেলেন ইহুদীরাও এই দিনে রোযা রাখছে।প্রিয় নবী(সা:)তাদের এই দিনে রোযা রাখার কারন জানতে চাইলেন,জানতে পারলেন, এই দিনে মুসা (আ:)সিনাই পাহাড়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওরাত কিতাব লাভ করেন।এই দিনেই তিনি বনি ইসরাইলের ফেরআউনের জেল খানা থেকে উদ্ধার হন এবং লোহিত সাগর অতিক্রম করেন।আর ফেরআউন সেই সাগরে ডুবে মারা যায়।তাই কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ইহুদিরা এই দিনে রোযা রাখে।

মহানবী (সা) বললেন,মুসা (আ:) এর সংগে আমাদের সম্পর্ক্ তাদের চেয়ে বেশী ঘনিষ্ট ও অগ্রগন্য।এর পর তিনি দশই মহররম এর সংগে নয়ই মহররম এবং এগারই মহররম মিলিয়ে দুইটি রোজা রাখতে বললেন।কারন ইহুদীদের সংগে মুসলমানদের যেন কোন সাদৃশ্য না হয়ে যায়।দ্বিতীয় হিজরীতে রমজান মাসের রোযা ফরজ করা হলে,আশুরার রোজা নফল হয়ে যায়।তবে রমজানের রোজা রাখার পর,আশুরার রোজা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ন্ ও ফজিলতপূর্ন্।

এমাসের নফল রোজা ও অন্যান্য এবাদত রমজান মাস ব্যাতিত অন্য যেকোন মাস অপেক্ষা অধিক উত্তম।দশই মহররম আশুরার রোজা রাখা সুন্নত।আশুরার দিনে ও রাতে নফল নামাজ পড়া, মহররম মাসের তের ও চৌদ্দ তারিখের আইয়ামে বীজের সুন্নত রোজা,বিশ উনত্রিশ ও ত্রিশ তারিখের নফল রোজা এবং প্রতি সোম ও বৃহ:বার সুন্নত রোযা এবং এই মাসে মহররম মাসে প্রতি রাতে ১০০ বার দরুদ শরীফ এবং ৭০ বার এস্তেগফার পড়া অত্যন্ত ফজিলতের আমল।এই আমলটি রাহাতুল কুতুব নামক ইমাম রাজিন (রা:) উল্লেখ করেছেন।

আশুরার রোযা রাখার চারটি নিয়ম রয়েছে। (১) ১ থেকে ১০ তারিখ পর্ন্তুল মোট দশটি রোজা রাখা। (২) তা সম্ভব না হয়ে ৯,১০ ও ১১ তারিখ মোট তিনটি রোজা রাখা। (৩) তাও সম্ভব না হলে ৯ ও ১০ তারিখ অথবা ১০ ও ১১ তারিখ ২টি রোজা রাখা। (৪) এটাও যদি সম্ভব না হয় শুধু ১০ তারিখে একটি হলেও রোজা রাখা। যদি কেউ ১০ তারিখের রোজা রাখে এবং ৯ ও ১১ তারিখ রাখতে না পারেন তবে জোড়া মিলাবার জন্য অন্য কোন তারিখের রোজা রাখার প্রয়োজন হবে না।

হযরত কাতাদা (রা:) থেকে বর্নিত রাসুলে আকরাম (সা:)বলেন:”আশুরার রোজার ব্যাপারে আমি আশাবাদী,আল্লাহ তা’লা এর উসিলায় অতীতের এক বৎসরের গুনাহ মাফ করে দিবেন।(তিরমীজি,মসনদে আহমদ)।

হযরত আবু হোরায়রা (রা:) থেকে বর্নিত,রাসুলে করিম (সা:)বলেন,”রমজানের রোজার পরে মহররমের রোজ হলো সর্শ্রেনদষ্ট।যেমন ফরজ নামাজের পরে শেষ রাতের তাহাজ্জুতের নামাজ সব চেয়ে বেশী মর্যাদাসম্পন্ন।”

আসুন,আশুরার দিন আগে বা পরে এক দিন সহ রোজা রেখে আল্লাহর কল্যান লাভের সুযোগ গ্রহণ করি।–আমিন।

ছোট্ট একটি তাসবিহ কিন্তু সাওয়াব-ফজিলত অনেক বেশি।

উম্মত জননী হজরত জুওয়াইরিয়া (রা.) বর্ণনা করেন, একদিন আল্লাহর নবী (সা.) ফজরের সময় আমার ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। তখন আমি জায়নামাজে ছিলাম। ত...