গীবত শব্দটি ইসমে মাছদর অভিধানে বিভিন্ন অর্থে ব্যাবহৃত হয়।
১. পরনিন্দা করা,২. কুৎসা রটনা করা,৩. গোপনে সমালোচনা করা
৪. দোষ বর্ননা করা।
৪. দোষ বর্ননা করা।
কারো অনুপস্থিতে অন্যের কাছে এমন দোষ বর্ননা করা যা সে শুনলে খারাপ লাগে, অপছন্দ করে বা অসন্তুষ্ট হয় তাকেই গীবত বলে। চাই মুখে হোক আর লেখনীতে হউক। কোন মুসলমানের নিকট হউক আর অমুসলিমের নিকট হউক। বর্ণিত দোষ যদি ঐ ব্যক্তির মধ্যে থাকে তবে তা গীবত হবে।আর যদি না থাকে মিথ্যা বানিয়ে বর্ণনা করা হয় তাহলে তা হবে অপবাদ।
রাসুলুল্লাহ (সঃ) একদিন সাহাবায়ে কেরামদের জিজ্ঞেস করলেন তোমরা জান গীবত কাকে বলে? সাহাবায়ে কেরাম বললেন আল্লাহ ও তার রাসুল (সঃ) ভাল জানেন জবাবে রাসুল (সঃ) ইরশাদ করলেন ‘‘জিকরুকা আখাকা বিমা ইয়াক্রাহু” গীবত হচ্ছে তোমার অপর ভাইয়ের এমন দোষ বর্ণনা করা যা সে শুনলে অসন্তুষ্ট হবে। সাহাবায়ে কেরাম বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ বর্ণনাকৃত দোষ যদি তাহার মাঝে থাকে তবে কি গীবত হবে। রাসুল (সঃ) বললেন- যার দোষ বর্ণনা করা হবে তাহার মাঝে যদি এ দোষ বিদ্যমান থাকে তবে তা গীবত হবে আর যদি না থাকে তবে অপবাদ হবে। (মুসলিম)
আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন পবিত্র কালামে এরশাদ করেন ‘‘ওলা ইয়াখতাব বা’য়দুকুম বা’য়দা’’
–তোমরা একে অপরের গীবত করোনা ।
–তোমরা একে অপরের গীবত করোনা ।
আবার অনেকে মৃতদের দোষ বর্ণনা করে তাও হারাম। কারন রাসুল (সঃ) বলেছেন-তোমাদের কেউ মারা গেলে তাকে ছেড়ে দাও। তার গীবত করনা। তিনি আরো বলেছেন-তোমরা মৃতদের সদগুন সমুহ আলোচনা কর এবং মন্দ আলোচনা থেকে বিরত থাক।
গীবত শুনা:
কারো গীবত শুনে চুপ থেকে প্রতিবাদ না করা কানের গীবত । কেননা গীবত শুনে চুপ থাকা এবং প্রতিবাদ না করা নিজেই গীবত করার শামিল।
কারো গীবত শুনে চুপ থেকে প্রতিবাদ না করা কানের গীবত । কেননা গীবত শুনে চুপ থাকা এবং প্রতিবাদ না করা নিজেই গীবত করার শামিল।
কারন রাসুল (সঃ) বলেছেন- যখন কারো গীবত করা হয় আর তুমি সে মজলিসে বসা থাক তখন তুমি গীবতকৃত ব্যক্তির সাহয্যকারী হও। এভাবে, তুমি তার প্রশংসা শুরু করে দাও যাতে মানুষ তার গীবত হতে বিরত হয় এবং গীবতকারীকে গীবত করা হতে নিষেধ কর। নতুবা মজলিস হতে চলে যাও কেননা চুপচাপ বসে থাকলে তুমিও গীবতকারী গণ্য হবে। যেমন মায়মুন বিন সিয়াহ (রাঃ) নিজের অবস্থার বর্ণনায় বলেন-একদিন আমি ঘুমাচ্ছিলাম স্বপ্নে দেখলাম আমার সামনে এক মৃত হাবশীকে এনে কেউ বলছে “হে মায়মুন তুমি এ হাবশী মৃতকে খাও” আমি বললাম- আমি কেন হাবশীকে খাব। সে বলল- তুমি অমুকের গীবত করেছ। আমি বললাম আল্লাহর কসম আমি তার গীবত করিনি সে বলল – যদিও তুমি গীবত করনি তবে শুনেছ। আর গীবত শুনা আর গীবত করা একই রকম গোনাহ।
খারাপ ধারনা ও গীবত:
কোন কোন নেককার পূণ্যবান লোক সম্পর্কে বিনা কারনে বিনা প্রমাণে সন্দেহ প্রবণ হয়ে খারাপ ধারনা পোষন অন্তরের গীবত।
কোন কোন নেককার পূণ্যবান লোক সম্পর্কে বিনা কারনে বিনা প্রমাণে সন্দেহ প্রবণ হয়ে খারাপ ধারনা পোষন অন্তরের গীবত।
অঙ্গ প্রত্যঙ্গের গীবত:
হাত,পা,নাক অথবা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়ে অন্যের দোষ বুঝিয়ে দেয়া যেমন কেউ হাটে বা বাজারে চলছে একজনের সাথে কিছু বেশী কথা বলছে আপনি ইশারা দিয়ে তার মাথা খারাপ বুঝিয়ে দেয়া ও গীবত। বা কেহ মজলিস থেকে উঠে গেল হাতে তার প্রতি ইশারা করা, ঠোট বাকা করা উদ্দেশ্য লোকটি ভাল নয় ইত্যাদি অঙ্গ প্রত্যঙ্গের গীবত।
হাত,পা,নাক অথবা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়ে অন্যের দোষ বুঝিয়ে দেয়া যেমন কেউ হাটে বা বাজারে চলছে একজনের সাথে কিছু বেশী কথা বলছে আপনি ইশারা দিয়ে তার মাথা খারাপ বুঝিয়ে দেয়া ও গীবত। বা কেহ মজলিস থেকে উঠে গেল হাতে তার প্রতি ইশারা করা, ঠোট বাকা করা উদ্দেশ্য লোকটি ভাল নয় ইত্যাদি অঙ্গ প্রত্যঙ্গের গীবত।
জনৈকা রমণী রাসুলুল্লাহ্ (সঃ) এর সান্নিধ্যে আগমন করে,আগন্তুক ছিল খর্বাকৃতির। সে চলে গেলে হজরত আয়শা সিদ্দিকা (রাঃ) তুচ্ছার্থে তার দিকে ইশারা করলেন। এতে রাসুল (সঃ) বললেন হে আয়শা ! তুমি তার গীবত করলে। (বায়হকী )
গীবত হারাম:
গীবত অকাট্য হারাম এবং এর হারাম হওয়া সুস্পষ্ট দলিল দ্বারা প্রমাণিত। গীবত হারাম হওয়া অস্বীকারকারী কাফের। যে বলবে গীবত হালাল সে কাফের হয়ে যাবে। কেননা গীবত হারাম হওয়া কোরআনের আয়াত ও অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। আল্লাহ পাক কোরআন মজিদে এরশাদ করেন – “তোমরা একে অন্যের গীবত করনা, কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পচন্দ করবে? অবশ্য তোমরা তা অপচন্দই করবে।”
গীবত অকাট্য হারাম এবং এর হারাম হওয়া সুস্পষ্ট দলিল দ্বারা প্রমাণিত। গীবত হারাম হওয়া অস্বীকারকারী কাফের। যে বলবে গীবত হালাল সে কাফের হয়ে যাবে। কেননা গীবত হারাম হওয়া কোরআনের আয়াত ও অসংখ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। আল্লাহ পাক কোরআন মজিদে এরশাদ করেন – “তোমরা একে অন্যের গীবত করনা, কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পচন্দ করবে? অবশ্য তোমরা তা অপচন্দই করবে।”
এক সফরে মহানবী (সঃ) হজরত সালমান ফারেসী (রাঃ) কে দুই ধনাঢ্য ব্যক্তির সঙ্গী করে দেন। পথিমধ্যে একদিন মনজিলে অবতরণ করলে ধনী ব্যক্তিদ্বয় কোন কাজে চলে যান এবং সালমান (রাঃ) ঘুমিয়ে পড়েন। তারা দুইজন কাজ শেষ করে এসে জিজ্ঞেস করলেন হে সালমান – খাওয়া দাওয়ার কোন ব্যবস্থা হয়েছে কি? তিনি বললেন আমার ঘুম এসে গেছে। তাই কিছুই প্রস্তুত করতে পারিনি। তারা বললেন যাও ! রাসুল (সঃ) এর নিকট থেকে কিছু খাদ্য নিয়ে আস। সালমান (রাঃ) মহানবী (সঃ) কে বর্ণনা করলে তিনি বললেন আমার ভান্ডার রক্ষক ওসামা’র নিকট যাও এবং কিছু থাকলে নিয়ে আস। তিনি হজরত ওসামা (রাঃ) নিকট গেলে তিনি বললেন-আমার নিকট দেবার মত কিছুই নেই। সালমান (রাঃ) ফিরে গিয়ে তার সফরসঙ্গীদের অবহিত করলেন। এখবর শুনে তারা হজরত ওসামার গীবত করেন। এবং রাসুল (সঃ) এর নিকট সঙ্গীদ্বয় গমন করেন। রাসুল (সঃ) বললেন তোমাদের দাতে গোশতের রংলেগে রয়েছে। তারা বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ আজ আমরা মোটেই গোশত খাইনি। রাসুল (সঃ) বললেন- তোমরা এই মাত্র ওসামা এবং সালমানের গোশত খেয়েছ। কেননা তোমরা উভয়ের গীবত করেছ। আর কারো গীবত করা গোশত খাওয়ার নামান্তর। তখন আল্লাহ পাক উপরোল্লেখিত আয়াত নাজিল করেন।
গীবতকে গোশত ভক্ষনের সাথে তুলনার কারন:
কোরআনের আয়াত ও হাদীসে গীবতকে গোশত ভক্ষনের সাথে তুলনার কারন হচ্ছে কারো গোশত ভক্ষনে যেমন তাকে চরম হেয় অপদস্থ করা হয় অনুরুপ গীবত দ্বারাও তার সম্মান মর্যাদা চুর্ণ বিচুর্ণ করা হয়। সুতরাং যখন কারো গীবত করা হল তখন যেন তার গোশতই ভক্ষন করা হল। এ কারনে গীবতকে গোশত ভক্ষনের সাথে তুলনা করা হয়েছে। অথবা মানুষ বা কোন মৃত জীবের গোশত ভক্ষন করা যেমন হীন তেমনি গীবত ও অত্যন্ত ঘৃনিত বিষয়।
কোরআনের আয়াত ও হাদীসে গীবতকে গোশত ভক্ষনের সাথে তুলনার কারন হচ্ছে কারো গোশত ভক্ষনে যেমন তাকে চরম হেয় অপদস্থ করা হয় অনুরুপ গীবত দ্বারাও তার সম্মান মর্যাদা চুর্ণ বিচুর্ণ করা হয়। সুতরাং যখন কারো গীবত করা হল তখন যেন তার গোশতই ভক্ষন করা হল। এ কারনে গীবতকে গোশত ভক্ষনের সাথে তুলনা করা হয়েছে। অথবা মানুষ বা কোন মৃত জীবের গোশত ভক্ষন করা যেমন হীন তেমনি গীবত ও অত্যন্ত ঘৃনিত বিষয়।
হাসরে অন্যের গীবতকারীর অবস্থা:
হাসরের ময়দানে মানুষ যখন আল্লাহর দরবারে হাজির হবে,তখন সবাই নিজেদের গোনাহের কথা স্মরণ করবে। সেদিন কারো কোন সাহায্যকারী থাকবেনা। কেউ বলবে এ আমার অধিকার হরন করেছে কেউ বলবে এ আমার গীবত করেছে। আল্লাহ পাক ন্যায় বিচার করবেন তিনি প্রত্যেক দাবীদারকে সন্তুষ্ট করবেন। যারা গীবত করেছে গীবতকারীর আমলনামা থেকে সমপরিমান নেকি নিয়ে গীবতকৃত ব্যক্তির আমল নামায় দেয়া হবে এবং গীবতকৃত ব্যক্তির অপরাধগুলো গীবতকারীর আমলনামায় দেয়া হবে।
হাসরের ময়দানে মানুষ যখন আল্লাহর দরবারে হাজির হবে,তখন সবাই নিজেদের গোনাহের কথা স্মরণ করবে। সেদিন কারো কোন সাহায্যকারী থাকবেনা। কেউ বলবে এ আমার অধিকার হরন করেছে কেউ বলবে এ আমার গীবত করেছে। আল্লাহ পাক ন্যায় বিচার করবেন তিনি প্রত্যেক দাবীদারকে সন্তুষ্ট করবেন। যারা গীবত করেছে গীবতকারীর আমলনামা থেকে সমপরিমান নেকি নিয়ে গীবতকৃত ব্যক্তির আমল নামায় দেয়া হবে এবং গীবতকৃত ব্যক্তির অপরাধগুলো গীবতকারীর আমলনামায় দেয়া হবে।
গীবত যেনার চাইতেও ভয়ংকর:
গীবতকে যেনার চাইতে ও ভয়ংকর বলার কারন হচ্ছে যেনা করে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ মাফ করে দিতে পারেন যেহেতু সেটি আল্লাহর হক্ব কিন্তু গীবত করা, কাউকে গালি দেয়া, কারো প্রতি জুলুম করা এগুলো বান্দার হক্ব তাই বান্দা মাফ করে না দেয়া পর্যন্ত মাফ হবেনা ।
গীবতকে যেনার চাইতে ও ভয়ংকর বলার কারন হচ্ছে যেনা করে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ মাফ করে দিতে পারেন যেহেতু সেটি আল্লাহর হক্ব কিন্তু গীবত করা, কাউকে গালি দেয়া, কারো প্রতি জুলুম করা এগুলো বান্দার হক্ব তাই বান্দা মাফ করে না দেয়া পর্যন্ত মাফ হবেনা ।
হজরত সুফিয়ান ইবনে আব্দুল্লাহ সাকাফী হতে বর্ণিত তিনি বলেন আমি রাসুল (সঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম – হে আল্লাহর রাসুল (সঃ) আমার জন্য যে সকল বস্তু ভয়ংকর মনে করেন তন্মধ্যে সর্বাধিক ভয়ংকর কোনটি? বর্ণনাকরী বলেন-তখন রাসুল (সঃ) স্বীয় জিহ্বা ধরলেন এবং বললেন- এটি অর্থাৎ জিহবা। (তিরমিযী)
এক যুবক আব্দুল্লাহ ইবনুল মোবারক (রঃ) এর সমীপে এসে
বলতে লাগল আমি একটি বড় গোনাহ করেছি তিনি বললেন বল কি গোনাহ করেছো? যুবক বলল আমি যেনা করেছি তিনি বললেন আলহামদুলিল্লাহ ! তুমি গীবত তো করনি । কেননা গীবত যেনার চাইতে ও বড় গোনাহ । (তাজকেরাতুল আউলিয়া)
বলতে লাগল আমি একটি বড় গোনাহ করেছি তিনি বললেন বল কি গোনাহ করেছো? যুবক বলল আমি যেনা করেছি তিনি বললেন আলহামদুলিল্লাহ ! তুমি গীবত তো করনি । কেননা গীবত যেনার চাইতে ও বড় গোনাহ । (তাজকেরাতুল আউলিয়া)
এক মহিলা এক মাদরাসায় এসে মাদরাসা প্রধানকে বলল, আমি একটি মাসআলা জিজ্ঞেস করতে চাই, কিন্তু লজ্জার কারনে তা মুখে আনতে পারছিনা। মাদরাসা প্রধান বললেন, তোমার মাসআলা বর্ণনা কর লজ্জা করনা। তখন মহিলা বলল- আমি যেনা করেছি এবং গর্ভ ধারন করেছি অতঃপর যেনার ফসল যে ছেলে জন্ম নিয়েছে তাকে হত্যা করেছি। এ বর্ণনা শুনে উপস্থিত সকল বিস্মত হয়। মাদরাসা প্রধান বললেন, হে লোক সকল ! তোমরা এ গোনাহে বিস্ময় প্রকাশ করেছো জেনে নাও গীবতের গোনাহ এর চাইতে বড়। কেননা যেনাকার গোনাহ হতে তওবা করলে আল্লাহ তওবা কবুল করেন। কিন্তু গীবতকারী তওবা করলেও আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করেন না যতক্ষন না যার গীবত করা হয়েছে সে মাফ করে। ( খাযানাতুর রেওয়ায়াত)
শেখ সাদীর ঘটনা:
এক রাতে শেখ সাদী তিনি পিতার নিকট বসে কোরআন তিলাওয়াত করছিলেন। আর কিছু লোক পড়ে ঘুমাচ্ছিল । শেখ সাদী পিতাকে বললেন লোক গুলোর কি হয়েছে এভাবে পড়ে ঘুমাচ্ছে। যদি না ঘুমিয়ে জেগে জেগে নামাজ আদায় করত। শেখ সাদীর পিতা বললেন বাবা তুমিও যদি কোরআন তেলাওয়াত না করে এভাবে ঘুমিয়ে থাকতে তবে অনেক ভাল হত কারন গীবত থেকে বেঁচে থাকতে। অন্যের দোষ বর্ণনা থেকে মুক্তি পেতে।
এক রাতে শেখ সাদী তিনি পিতার নিকট বসে কোরআন তিলাওয়াত করছিলেন। আর কিছু লোক পড়ে ঘুমাচ্ছিল । শেখ সাদী পিতাকে বললেন লোক গুলোর কি হয়েছে এভাবে পড়ে ঘুমাচ্ছে। যদি না ঘুমিয়ে জেগে জেগে নামাজ আদায় করত। শেখ সাদীর পিতা বললেন বাবা তুমিও যদি কোরআন তেলাওয়াত না করে এভাবে ঘুমিয়ে থাকতে তবে অনেক ভাল হত কারন গীবত থেকে বেঁচে থাকতে। অন্যের দোষ বর্ণনা থেকে মুক্তি পেতে।
কিয়ামতে গীবতকারীর সাথে যে ব্যবহার করা হবে:
হজরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন- যে দুনিয়ায় নিজের ভাইয়ের গোশত খেয়েছ গীবত করেছ আখেরাতে গীবতকারীর সামনে সে গোশত উপস্থাপন করা হবে। তাকে আদেশ করা হবে, যেভাবে দুনিয়ায় তুমি তার গোশত খেয়েছ গীবত করেছ, এখনও অনুরুপ তুমি তার গোশত খাও। গীবত কারী সে গোশত মুখে দিতেই তার মুখ বিকৃত হয়ে যাবে। এতে সে অপমাণিত ও অপদস্থ হবে। ( আততারগীব ওয়াততারহীব)
হজরত আবু হোরায়রা (রাঃ) বলেন- যে দুনিয়ায় নিজের ভাইয়ের গোশত খেয়েছ গীবত করেছ আখেরাতে গীবতকারীর সামনে সে গোশত উপস্থাপন করা হবে। তাকে আদেশ করা হবে, যেভাবে দুনিয়ায় তুমি তার গোশত খেয়েছ গীবত করেছ, এখনও অনুরুপ তুমি তার গোশত খাও। গীবত কারী সে গোশত মুখে দিতেই তার মুখ বিকৃত হয়ে যাবে। এতে সে অপমাণিত ও অপদস্থ হবে। ( আততারগীব ওয়াততারহীব)
হজরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর উপদেশ:
হজরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) বলেন- যখন তুমি তোমার কোন বন্ধুর গীবত করেতে ইচ্ছা করেবে তখন নিজের দোষের কথা স্মরণ কর। নিজের গোনাহ সমুহ সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা কর। তাহলে গীবত থেকে নাজাত পাবে এবং জান্নাত পাবে। যদি নিজের দোষ সমুহ না দেখে অন্যের দোষ সমুহ আকড়ে ধর তাহলে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতে তোমার দোষ সমুহ প্রকাশ করে দেবেন। (এহিয়াউল উলুম)
হজরত আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রাঃ) বলেন- যখন তুমি তোমার কোন বন্ধুর গীবত করেতে ইচ্ছা করেবে তখন নিজের দোষের কথা স্মরণ কর। নিজের গোনাহ সমুহ সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা কর। তাহলে গীবত থেকে নাজাত পাবে এবং জান্নাত পাবে। যদি নিজের দোষ সমুহ না দেখে অন্যের দোষ সমুহ আকড়ে ধর তাহলে আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতে তোমার দোষ সমুহ প্রকাশ করে দেবেন। (এহিয়াউল উলুম)
গীবত ফাসেক পাপাচারীর মেহমানদারী:
হজরত আবু এমরান (রঃ) বললেন-“গীবত ফাসেক পাপাচারীদের মেহমানদারী এবং নারীকুলের চারণভূমি, মানুষ কুকুরদের তরকারি এবং আল্লাহ ভীরুদের দুরত্ব অবলম্বনের ক্ষেত্র। ’’
হজরত আবু এমরান (রঃ) বললেন-“গীবত ফাসেক পাপাচারীদের মেহমানদারী এবং নারীকুলের চারণভূমি, মানুষ কুকুরদের তরকারি এবং আল্লাহ ভীরুদের দুরত্ব অবলম্বনের ক্ষেত্র। ’’
গীবত ফাসেক পাপাচারীদের মেহমানদারী- বলার কারণ ফাসেক পাপাচারীরা একত্রিত হলে গীবতের বাজার জমে। বর্তমানকালে বিশিষ্টজনরা যখন খেতে বসেন তখন অনেক গল্পকাহিনী বর্ণনা করেন যা গীবতে পরিনিত হয়। একে অণ্যের সাথে মিলিত হলে মানুষের গীবত দ্বারা পরস্পরের মেহমানদারী করে, দোষত্র“টি প্রকাশ করে, অপমান – অপদস্থ করে গীবত দ্বারাই তাদের মন সন্তুষ্ট হয় । সুতরাং গীবত ফাসেক পাপাচারীদের মেহমানদারী।
রমণীকুলের চারণভূমি বলার কারন:
এ উক্তির মর্ম হল চতুষ্পদ জন্তু যেমন ঘাস পেলে খুশী হয়ে দৌড়ায় তেমনি নারীরাও কোন মজলিসে কারো গীবত হচ্ছে দেখতে পেলে ঝটপট গিয়ে শরীক হয়।
এ উক্তির মর্ম হল চতুষ্পদ জন্তু যেমন ঘাস পেলে খুশী হয়ে দৌড়ায় তেমনি নারীরাও কোন মজলিসে কারো গীবত হচ্ছে দেখতে পেলে ঝটপট গিয়ে শরীক হয়।
জাহান্নামে গীবতকারীদের খাজলী হবে:
জাহান্নামে গীবতকারীদের ভীষণ খাজলী হবে। খাজলীর কারনে তাদের চামড়া নিঃশেষ হয়ে যাবে। হাড় বেরিয়ে আসবে। তখন ধ্বনিত হবে হে লোক সকল! এ খাজলীর কারনে কি তোমাদের কষ্ট হচ্ছে? জাহান্নামীরা জবাব দিবে হ্যাঁ। তাদেরকে জবাব দেয়া হবে, তোমাদের এ কষ্টের কারন, দুনিয়ায় তোমরা মানুষদেরকে হেয় পতিপন্ন করতে,অপমান -অপদস্থ করতে, মুসলমানদেরকে কষ্ট দিতে তাই।
জাহান্নামে গীবতকারীদের ভীষণ খাজলী হবে। খাজলীর কারনে তাদের চামড়া নিঃশেষ হয়ে যাবে। হাড় বেরিয়ে আসবে। তখন ধ্বনিত হবে হে লোক সকল! এ খাজলীর কারনে কি তোমাদের কষ্ট হচ্ছে? জাহান্নামীরা জবাব দিবে হ্যাঁ। তাদেরকে জবাব দেয়া হবে, তোমাদের এ কষ্টের কারন, দুনিয়ায় তোমরা মানুষদেরকে হেয় পতিপন্ন করতে,অপমান -অপদস্থ করতে, মুসলমানদেরকে কষ্ট দিতে তাই।
গীবত মোনাফেকী:
হজরত ইবনে উমর (রাঃ) এক ব্যক্তিকে হাজ্জাজ বিন ইউসুফের গীবত করতে শুনে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, যদি হাজ্জাজ এখানে উপস্থিত থাকতো তবে তুমি কি তার দোষ বর্ণনা করতে ? সে বলল না। তখন তিনি বললেন – মানুষের সামনে প্রশংসা এবং পিছনে দূর্নাম রটনা রাসুলুল্লাহ (সঃ) বিদ্যমান থাকা অবস্থায় সাহাবায়ে কেরাম এ আচরণকে মোনাফেকী মনে করতেন। (এহইয়াউল উলুম)
হজরত ইবনে উমর (রাঃ) এক ব্যক্তিকে হাজ্জাজ বিন ইউসুফের গীবত করতে শুনে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, যদি হাজ্জাজ এখানে উপস্থিত থাকতো তবে তুমি কি তার দোষ বর্ণনা করতে ? সে বলল না। তখন তিনি বললেন – মানুষের সামনে প্রশংসা এবং পিছনে দূর্নাম রটনা রাসুলুল্লাহ (সঃ) বিদ্যমান থাকা অবস্থায় সাহাবায়ে কেরাম এ আচরণকে মোনাফেকী মনে করতেন। (এহইয়াউল উলুম)
মিরাজের ঘটনা:
রাসুলুল্লাহ (সঃ) এরশাদ করেন- যখন আমি মিরাজে গমন করি, তখন চলার পথে বিস্ময়কর এবং ভয়ংকর দৃশ্য সমুহ অবলোকন করি। তা হল -এক জায়গায় একদল লোককে দেখতে পেলাম, তাদের নোখগুলো তামার। তারা এ তামার নোখ দ্বারা নিজেদের মুখমন্ডল এবং বক্ষ আচড়াচ্ছে। আমি জিব্রাইল (আঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তিনি বললেন-এরা দুনিয়ায় মানুষের গোশত খেত (গীবত করত)।
রাসুলুল্লাহ (সঃ) এরশাদ করেন- যখন আমি মিরাজে গমন করি, তখন চলার পথে বিস্ময়কর এবং ভয়ংকর দৃশ্য সমুহ অবলোকন করি। তা হল -এক জায়গায় একদল লোককে দেখতে পেলাম, তাদের নোখগুলো তামার। তারা এ তামার নোখ দ্বারা নিজেদের মুখমন্ডল এবং বক্ষ আচড়াচ্ছে। আমি জিব্রাইল (আঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তিনি বললেন-এরা দুনিয়ায় মানুষের গোশত খেত (গীবত করত)।
গীবত ও চোগলখোরীর মধ্যে পার্থক্য:
দুই ব্যক্তির মধ্যে ঝগড়া মনোবাদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একজনের কথা অন্য জনের নিকট বর্ননা করা হচ্ছে চোগলখোরী। যেমন – কাউকে এরুপ বলা অমুক তোমাকে মন্দ বলে, তোমার নিন্দাবাদ করে ।
দুই ব্যক্তির মধ্যে ঝগড়া মনোবাদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে একজনের কথা অন্য জনের নিকট বর্ননা করা হচ্ছে চোগলখোরী। যেমন – কাউকে এরুপ বলা অমুক তোমাকে মন্দ বলে, তোমার নিন্দাবাদ করে ।
হজরত হোজায়ফা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন-আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না (বুখারী)
আর গীবত হচ্ছে কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষ বর্ননা করা। এ ক্ষেত্রে ঝগড়া, ফ্যসাদ সৃষ্টির উদ্দেশ্য না ই থাকুক। অতএব যেখানে চোগলখোরী থাকবে সেখানে গীবতও থাকবে।
হজরত সাহল ইবনে সাদ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি আমার জন্য তার দু-চোয়ালের মধ্যস্থিত স্থানের এবং দু-পায়ের মধ্যস্থিত স্থানের জিম্মাদার হতে পারবে আমি তার জন্য বেহেশতের জিম্মাদার হব। (বুখারী)
রাসুল (সঃ) এরশাদ করেছেন – “লা তাবাখাজু ওলা তাদাবারু ওলা তানাফাসু ওকুনু ইবাদাল্লাহি ইখওয়ানা”
— তোমরা পরস্পরে ঈর্ষা বিদ্বেষ পোষন করনা, গীবত করনা, দুনিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হয়োনা, আর আল্লাহর বান্দারা সবাই ভাই ভাই হয়ে যাও।
— তোমরা পরস্পরে ঈর্ষা বিদ্বেষ পোষন করনা, গীবত করনা, দুনিয়ার প্রতি আকৃষ্ট হয়োনা, আর আল্লাহর বান্দারা সবাই ভাই ভাই হয়ে যাও।
গীবতের ক্ষতি:
গীবতের কারনে দুনিয়া আখেরাতের ক্ষতি হয়
১.দোয়া কবুল হয়না
যে বেশী গীবত করে সে খুব কমই অনুতপ্ত ও লজ্জিত হয়। এজন্য তার দোয়া কবুল হয়না এবং তার প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়না।
২.ফকীহ আবুল লায়স সমরকন্দি (রঃ) তাম্বীহুল গাফেলীন গ্রন্থের ঈর্ষা বিদ্ধেষ অধ্যায়ে উল্লেখ করেন – তিন ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়না।
১. হারাম ভক্ষণকারী
২.অধিক গীবতকারী
৩. মুসলমানের সাথে বিদ্ধেষ পোষন কারী বা কৃপনতা কারী।
লোকেরা হজরত ইব্রাহীম আদহাম (রঃ) কে দোয়া কবুল না হওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন-তোমাদের অন্তর মৃত আর আটটি কারনে তোমাদের অন্তরের সজীবতা রাখেনী তা হচ্ছে।
গীবতের কারনে দুনিয়া আখেরাতের ক্ষতি হয়
১.দোয়া কবুল হয়না
যে বেশী গীবত করে সে খুব কমই অনুতপ্ত ও লজ্জিত হয়। এজন্য তার দোয়া কবুল হয়না এবং তার প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়না।
২.ফকীহ আবুল লায়স সমরকন্দি (রঃ) তাম্বীহুল গাফেলীন গ্রন্থের ঈর্ষা বিদ্ধেষ অধ্যায়ে উল্লেখ করেন – তিন ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়না।
১. হারাম ভক্ষণকারী
২.অধিক গীবতকারী
৩. মুসলমানের সাথে বিদ্ধেষ পোষন কারী বা কৃপনতা কারী।
লোকেরা হজরত ইব্রাহীম আদহাম (রঃ) কে দোয়া কবুল না হওয়ার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন-তোমাদের অন্তর মৃত আর আটটি কারনে তোমাদের অন্তরের সজীবতা রাখেনী তা হচ্ছে।
১. তোমরা আল্লাহ তায়ালার মহত্ব সম্পর্কে জান, তার শক্তি কুদরত সম্পর্কে অবগত অথচ তার নির্দেশ পালনে ত্র“টি কর।
২. তোমরা কোরআন তিলাওয়াত কর অথচ কোরআনের বিধান অনুযায়ী আমল করনা ।
৩. মুখে নবীর মহব্বত প্রকাশ কর অথচ সুন্নাহ ভিত্তিক জীবন পরিচালনা করনা।
৪. তোমরা মুখে বল মৃত্যুকে ভয় করি অথচ এবাদতের মাধ্যমে তার প্রস্তুতি গ্রহন করনা।
৫. আল্লাহ তায়ালা বলেছেন শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্র“ তাকে শত্র“ রুপেই গ্রহন কর অথচ তোমরা গোনাহের কাজ করে শয়তানকে বন্ধুরুপে গ্রহন করেছ।
৬. তোমরা মুখে বল আমরা জাহান্নামকে ভয় করি অথচ সদা সর্বদা গোনাহের কাজ করে নিজেদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করছো।
৭. তোমরা জান্নাতে যাওয়ার কামনা বাসনা পোষণ কর, অথচ এজন্য কোন পাথেয় সংগ্রহ করনা।
৮. যখন তোমরা জাগ্রত হও তখন নিজের দোষ পিছনে ফেলে দাও নিজের দোষের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করে অন্যের দোষ ত্র“টি নিজের সামনে রাখ, মানুষের নিন্দাবাদ কর, দূর্ণাম রটাও। এসব কারনে তোমাদের প্রতি রহমত নাজিল হয়না । ফলে তোমাদের দোয়াও কবুল হয়না।
৩.আমলনামা থেকে নেকী কমে যায়:
হজরত আবু উমামা বাহেলী (রাঃ) বলেন- কেয়ামতের দিন যখন প্রত্যেকের হাতে আমলনামা দেয়া হবে, তখন প্রত্যেকেই নিজ নিজ আমলনামায় নেকী দেখে খুশী হবে। আর যখন ওটার প্রতি দৃষ্টি পড়বে তখন অস্থির হবে। কিছু লোক নিজেদের আমলনামায় এমন নেকীসমূহ দেখতে পাবে যা তারা দুনিয়ায় করেনি। তারা আল্লাহতাআলাকে বলবে, ইয়া আল্লাহ! এসব নেক কাজ তো আমরা করিনি। এগুলো কিভাবে আমাদের আমাদের আমলনামায় অন্তর্ভুক্ত হল? আল্লাহ বলবেন, যদিও তোমরা এসব নেক কাজ করনি, কিন্তু যারা তোমাদের গীবত করেছে, তাদের আমলনামা থেকে এসব নেকী মিটিয়ে তোমাদের আমলনামায় লেখে দেয়া হয়েছে আর তাদের গীবত সম্পর্কে তোমরা অবহিত ছিলে না।
হজরত আবু উমামা বাহেলী (রাঃ) বলেন- কেয়ামতের দিন যখন প্রত্যেকের হাতে আমলনামা দেয়া হবে, তখন প্রত্যেকেই নিজ নিজ আমলনামায় নেকী দেখে খুশী হবে। আর যখন ওটার প্রতি দৃষ্টি পড়বে তখন অস্থির হবে। কিছু লোক নিজেদের আমলনামায় এমন নেকীসমূহ দেখতে পাবে যা তারা দুনিয়ায় করেনি। তারা আল্লাহতাআলাকে বলবে, ইয়া আল্লাহ! এসব নেক কাজ তো আমরা করিনি। এগুলো কিভাবে আমাদের আমাদের আমলনামায় অন্তর্ভুক্ত হল? আল্লাহ বলবেন, যদিও তোমরা এসব নেক কাজ করনি, কিন্তু যারা তোমাদের গীবত করেছে, তাদের আমলনামা থেকে এসব নেকী মিটিয়ে তোমাদের আমলনামায় লেখে দেয়া হয়েছে আর তাদের গীবত সম্পর্কে তোমরা অবহিত ছিলে না।
৪. আমলনামায় পাপের আধিক্য হওয়া:
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন তোমরা গীবত থেকে বেচেঁ থাক, কেননা তাতে তিনটি বিপদ রয়েছে এক গীবতকারীর দোয়া কবুল হয়না। দুই – তার কোন নেক কাজই কবুল হয়না। তিন- তার আমলনামায় পাপাধিক্য হয়।
রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন তোমরা গীবত থেকে বেচেঁ থাক, কেননা তাতে তিনটি বিপদ রয়েছে এক গীবতকারীর দোয়া কবুল হয়না। দুই – তার কোন নেক কাজই কবুল হয়না। তিন- তার আমলনামায় পাপাধিক্য হয়।
হজরত ইমাম গাজ্জালী (রঃ) বলেন- যদি তুমি দিনে রোজা রাখ আর রাতে এবাদত কর অতঃপর যদি লক্ষ্য কর কি পরিমান গীবত করেছ তবে দেখবে তোমার দিনের রোজা ও রাতের এবাদত এর চেয়ে পাপের বোঝা বেশী হয়ে গেছে। তাই অন্যের অধিকারের বোঝা থেকে নিজেকে বাচিঁয়ে রাখ।
৫.পূণ্য কর্ম সমুহ কবুল না হওয়া:
রাসুল (সঃ) এরশাদ করেন-আগুন এত তাড়াতাড়ি শুকনো বস্তুর উপর প্রতিক্রিয়া করেনা, যত তাড়াতাড়ি পূণ্য কর্মসমুহের উপর গীবতের প্রতিক্রিয়া হয়।
রাসুল (সঃ) এরশাদ করেন-আগুন এত তাড়াতাড়ি শুকনো বস্তুর উপর প্রতিক্রিয়া করেনা, যত তাড়াতাড়ি পূণ্য কর্মসমুহের উপর গীবতের প্রতিক্রিয়া হয়।
হজরত মোয়াজ (রাঃ) এক দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন উক্ত হাদীসে রাসুল (সঃ) এরশাদ করেন- হে মোয়াজ ! যারা আমলের সংরক্ষক এবং যেসব ফিরিশতা আমল লিপিবদ্ধ করেন কখনো এমন হয় যে, ফিরিশতা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময়ের নেক আমল সমুহ আসমানে নিয়ে যান, আর আমলসমুহ সূর্যের মত চমকিত হয়, আমলবাহী ফিরিশতা প্রথম আসমানে উপনীত হয়ে তা দ্বিতীয় আসমানে নিয়ে যেতে চান, তখন প্রথম আসমানে আল্লাহর নিযুক্ত ফেরেশতা বলেন এসব আমলকারীর মুখের উপর ছুড়ে মার এবং তাকে ক্ষমা করা হয়নি বলে সংবাদ দাও কেননা সে মুসলমানদের গীবত করেছে। সুতরাং তাহার আমল আল্লাহর দরবারে কবুল হয়নি।
(তাম্বীহুল গাফেলীন -তাফাক্কুর অধ্যায়)
(তাম্বীহুল গাফেলীন -তাফাক্কুর অধ্যায়)
৬. কিয়ামতে অধিকারের দাবীদারের ফরিয়াদ:
একদিন জনৈক ব্যক্তি যাহেদ (রঃ) এর সম্মুখে হাজ্জাজের গীবত ও তার জুলুম অত্যাচারের বর্ণনা করতে শুরু করে। তখন যাহেদ (রঃ) বললেন- আল্লাহ তায়ালা যথার্থ ন্যায় বিচারক। তিনি যেমন হাজ্জাজ থেকে অত্যাচারীতদের বিনিময় গ্রহন করবেন তেমনী হাজ্জাজের গীবতকারীদের কাছ থেকে ও তার গীবতের বিনিময় গ্রহন করবেন যখন সে তা দাবী করবে।
একদিন জনৈক ব্যক্তি যাহেদ (রঃ) এর সম্মুখে হাজ্জাজের গীবত ও তার জুলুম অত্যাচারের বর্ণনা করতে শুরু করে। তখন যাহেদ (রঃ) বললেন- আল্লাহ তায়ালা যথার্থ ন্যায় বিচারক। তিনি যেমন হাজ্জাজ থেকে অত্যাচারীতদের বিনিময় গ্রহন করবেন তেমনী হাজ্জাজের গীবতকারীদের কাছ থেকে ও তার গীবতের বিনিময় গ্রহন করবেন যখন সে তা দাবী করবে।
৭. গীবতকারীকে এক হাজার বৎসর দাড় করিয়ে রাখা হবে:
কিয়ামতের দিন আটটি মনজিল হবে এবং চতুর্থতম মনজিলে গীবতকারীকে এক হাজার বৎসর দাড় করিয়ে রাখা হবে।
কিয়ামতের দিন আটটি মনজিল হবে এবং চতুর্থতম মনজিলে গীবতকারীকে এক হাজার বৎসর দাড় করিয়ে রাখা হবে।
৮. কেয়ামতে দুঃখ লজ্জায় পতিত হওয়া:
কিয়ামতের আদালতে যখন কেউ কারো উপর দাবী করবে যে, সে আমার গীবত করেছে তখন আল্লাহ তায়ালা এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করবেন গীবতকারী স্বীকার করবে এবং জন সম্মুখে লজ্জিত হবে।
কিয়ামতের আদালতে যখন কেউ কারো উপর দাবী করবে যে, সে আমার গীবত করেছে তখন আল্লাহ তায়ালা এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করবেন গীবতকারী স্বীকার করবে এবং জন সম্মুখে লজ্জিত হবে।
কেয়ামতে গীবতকৃতের গোশত ভক্ষন:
কিয়ামতে যার গীবত করবে তাকে মৃতরুপে উপস্থাপন করা হবে এবং গীবতকারীকে হুকুম দেয়া হবে জীবদ্দশায় তুমি তার গোশত খেয়েছ এখন মৃত্যুর পরও তুমি তার গোশত ভক্ষন কর। সুতরাং গীবতকারী মৃতের গোশত খাবে এবং মুখ অত্যন্ত বিকৃত করবে।
কিয়ামতের দিন নিজের গোশত ভক্ষন
কিয়ামতে যার গীবত করবে তাকে মৃতরুপে উপস্থাপন করা হবে এবং গীবতকারীকে হুকুম দেয়া হবে জীবদ্দশায় তুমি তার গোশত খেয়েছ এখন মৃত্যুর পরও তুমি তার গোশত ভক্ষন কর। সুতরাং গীবতকারী মৃতের গোশত খাবে এবং মুখ অত্যন্ত বিকৃত করবে।
কিয়ামতের দিন নিজের গোশত ভক্ষন
রাসুল (সঃ) মেরাজ হতে প্রত্যাবর্তন করে এরশাদ করেন “যখন আমি মেরাজে গমন করি , তখন কিছু লোককে দেখতে পেয়েছি যাদের পার্শ্বদেশ হতে গোশত কেটে মুখে নিক্ষেপ করা হচ্ছে আর ফেরেশতাগন তাদের বলছেন যেভাবে দুনিয়ায় তোমরা আপন ভাইয়ের গোশত ভক্ষন করতে এখন তেমনি নিজের গোশত ভক্ষন কর । আমি জিজ্ঞেস করলাম হে জিব্রাইল (আঃ) এরা কারা ? তিনি বললেন এরা আপনার উম্মতের সেসব লোক যারা মানুষের গীবত করত।
জাহান্নামে বানরে পরিনত:
নুজহাতুল মাজালেস গ্রন্থে হজরত হাতেম আসাম্ম (রঃ) এর উক্তি তিনি বলেন-গীবতকারী জাহান্নামে বানরে পরিাণত হবে।
নুজহাতুল মাজালেস গ্রন্থে হজরত হাতেম আসাম্ম (রঃ) এর উক্তি তিনি বলেন-গীবতকারী জাহান্নামে বানরে পরিাণত হবে।
গীবতে শয়তান খূশী হয়:
একদিন হজরত ঈসা (আঃ) ইবলীস শয়তানকে দেখতে পেলেন তার এক হাতে মধু এবং আরেক হাতে ছাই তিনি এর কারন জিজ্ঞেস করলে সে বলল, এ ছাই আমি এতিমদের চেহারায় নিক্ষেপ করি , যাতে তাদের চেহারা বিশ্রী হয়ে যায় মানুষ তাদের থেকে দুরত্ব অবলম্বন করে। আর মধু গীবতকারীদের মুখে নিক্ষেপ করি কেননা তাদের প্রতি আমি সন্তুষ্ট ও প্রসন্ন চিত্ত হয়ে থাকি ।
একদিন হজরত ঈসা (আঃ) ইবলীস শয়তানকে দেখতে পেলেন তার এক হাতে মধু এবং আরেক হাতে ছাই তিনি এর কারন জিজ্ঞেস করলে সে বলল, এ ছাই আমি এতিমদের চেহারায় নিক্ষেপ করি , যাতে তাদের চেহারা বিশ্রী হয়ে যায় মানুষ তাদের থেকে দুরত্ব অবলম্বন করে। আর মধু গীবতকারীদের মুখে নিক্ষেপ করি কেননা তাদের প্রতি আমি সন্তুষ্ট ও প্রসন্ন চিত্ত হয়ে থাকি ।
আল্লাহ ও রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করা হয়:
যেহেতু আল্লাহ ও তার রাসুল (সঃ) গীবত নিষিদ্ধ করেছেন সেহেতু গীবতের মাধ্যমে আল্লাহ ও রাসুলের নিষেধের বিরুদ্ধ চারণ করা হল। আর যারা আল্লাহ ও রাসুলের বিরুদ্ধাচরন করে তাদের দুনিয়া ও আখেরাতে ধ্বংস অনিবার্য।
যেহেতু আল্লাহ ও তার রাসুল (সঃ) গীবত নিষিদ্ধ করেছেন সেহেতু গীবতের মাধ্যমে আল্লাহ ও রাসুলের নিষেধের বিরুদ্ধ চারণ করা হল। আর যারা আল্লাহ ও রাসুলের বিরুদ্ধাচরন করে তাদের দুনিয়া ও আখেরাতে ধ্বংস অনিবার্য।
গীবতের কারনে রোজা মাকরুহ হয়:
গীবতকারী রোজাদার হলে তার রোজা মাকরুহ হয়ে যায়। বরং হাদীস গ্রন্থ মেশকাত শরীফের ভাষ্য আশেয়াতুল লামায়েতে বলা হয়েছে গীবতের কারনে রোজা নষ্ট হয়ে যায় ।
গীবতের কারনে রাসুল (সঃ) পুনরায় রোজা রাখার নির্দেশ দেন দুই রোজাদার জোহর কিম্বা আসরের নামাজ রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর সাথে আদায় করলেন আসর নামাজ পরে তিনি তাদেরকে বললেন তোমরা যাও পুনরায় অজু কর এবং নামাজ আদায় কর। আর তোমাদের রোজা পূর্ণ করে অন্য কোন দিন রোজা ক্বাজা কর তারা আরজ করল হে আল্লাহর রাসুল (সঃ) কেন ক্বাজা করব? রাসুল (সঃ) বললেন-কেননা তোমরা অমুকের গীবত করেছ। (বায়হকী- হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।)
গীবতকারী রোজাদার হলে তার রোজা মাকরুহ হয়ে যায়। বরং হাদীস গ্রন্থ মেশকাত শরীফের ভাষ্য আশেয়াতুল লামায়েতে বলা হয়েছে গীবতের কারনে রোজা নষ্ট হয়ে যায় ।
গীবতের কারনে রাসুল (সঃ) পুনরায় রোজা রাখার নির্দেশ দেন দুই রোজাদার জোহর কিম্বা আসরের নামাজ রাসুলুল্লাহ (সঃ) এর সাথে আদায় করলেন আসর নামাজ পরে তিনি তাদেরকে বললেন তোমরা যাও পুনরায় অজু কর এবং নামাজ আদায় কর। আর তোমাদের রোজা পূর্ণ করে অন্য কোন দিন রোজা ক্বাজা কর তারা আরজ করল হে আল্লাহর রাসুল (সঃ) কেন ক্বাজা করব? রাসুল (সঃ) বললেন-কেননা তোমরা অমুকের গীবত করেছ। (বায়হকী- হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।)
গীবতের কারন:
১.ক্রোধ-
মানুষ কারনবশত কারো উপর ক্রুদ্ধহলে গীবত করে।
২.বংশ গৌরবঃ
নিজের বংশকে উত্তম মনে করে অন্যের বংশের গীবত করা ।
৩.এবাদতের অহংকার-
নিজেকে নেক কাজের কাজী মনে করে অহংকার করা, নিজেকে পুত পবিত্র ও মোত্তাকী ভাবা এবং অন্যকে হেয় করতে গীবত করা ।
৪.সাথীদের অনুসরণ করা-
বন্ধুজন বসে গল্প গুজব কওে, গীবত কওে, হাসিঠাট্্রা করে তাই অনেকেই মনে করেন আমিও সেখানে যাই দু চারটা কিস্সা কাহিনী শোনাই।
৫.বদকার আলেমদের অনুসরণ-
কিছু কিছু আলেমরা নিজের ইলিম ও বুজুর্গী জাহির করতে গীবত করেন। এতে অনেকেই ভাবেন হুজুররা গীবত করছেন তো আমরাও করি।
৬.ঈর্ষা-
মানুষ যখন অন্তরে কারো প্রতি ঈর্ষা পোষন করে তখন সে সদা সর্বদা ঈর্ষিত ব্যক্তির গীবত করে।
১.ক্রোধ-
মানুষ কারনবশত কারো উপর ক্রুদ্ধহলে গীবত করে।
২.বংশ গৌরবঃ
নিজের বংশকে উত্তম মনে করে অন্যের বংশের গীবত করা ।
৩.এবাদতের অহংকার-
নিজেকে নেক কাজের কাজী মনে করে অহংকার করা, নিজেকে পুত পবিত্র ও মোত্তাকী ভাবা এবং অন্যকে হেয় করতে গীবত করা ।
৪.সাথীদের অনুসরণ করা-
বন্ধুজন বসে গল্প গুজব কওে, গীবত কওে, হাসিঠাট্্রা করে তাই অনেকেই মনে করেন আমিও সেখানে যাই দু চারটা কিস্সা কাহিনী শোনাই।
৫.বদকার আলেমদের অনুসরণ-
কিছু কিছু আলেমরা নিজের ইলিম ও বুজুর্গী জাহির করতে গীবত করেন। এতে অনেকেই ভাবেন হুজুররা গীবত করছেন তো আমরাও করি।
৬.ঈর্ষা-
মানুষ যখন অন্তরে কারো প্রতি ঈর্ষা পোষন করে তখন সে সদা সর্বদা ঈর্ষিত ব্যক্তির গীবত করে।
গীবতের পরিণাম:
১. গীবত দ্বারা পারস্পারিক ভালবাসা,মহব্বত ও ভ্রাতৃত্ববোধ বিনষ্ট হয়।
২. সামাজিক জীবনে ঘৃনা, হিংসা ও শত্র“তার উন্মেষ ঘটে।
৩. অনেক সময় শত্র“তা ও মারামারি সংঘটিত হয়।
৪. সামাজে শান্তি শৃংখলা ও ভারসাম্য বিনষ্ট হয়।
৫. আল্লাহ তায়ালা অসন্তুষ্ট হন।
১. গীবত দ্বারা পারস্পারিক ভালবাসা,মহব্বত ও ভ্রাতৃত্ববোধ বিনষ্ট হয়।
২. সামাজিক জীবনে ঘৃনা, হিংসা ও শত্র“তার উন্মেষ ঘটে।
৩. অনেক সময় শত্র“তা ও মারামারি সংঘটিত হয়।
৪. সামাজে শান্তি শৃংখলা ও ভারসাম্য বিনষ্ট হয়।
৫. আল্লাহ তায়ালা অসন্তুষ্ট হন।
গীবতের কাফ্ফারা:
হজরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) ইরশাদ করেছেন- গীবতের কাফ্ফারা হলো তুমি যার গীবত করেছ তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। এরুপ বলবে হে আল্লাহ আমাকে ও তাকে ক্ষমা করুন। (বায়হকী দাওয়াতুল কবীর)
হজরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ (সঃ) ইরশাদ করেছেন- গীবতের কাফ্ফারা হলো তুমি যার গীবত করেছ তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। এরুপ বলবে হে আল্লাহ আমাকে ও তাকে ক্ষমা করুন। (বায়হকী দাওয়াতুল কবীর)
গীবতকারী নিজের জন্য এবং তার জন্য দোয়া করবে। তার ক্ষমা প্রার্থনা করবে। মাসআলার প্রকৃত রুপ এমন
১. যার গীবত করা হয়েছে তার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। পরে দোয়া ও ক্ষমা চাইবে।
২. যদি সে ব্যক্তি দুরে থাকে সরাসরি তার নিকট ক্ষমা চাওয়া সম্ভব নয় তখন এভাবে দোয়া করবে “আল্লাহুমাগফিরলি লি অলিমান ইবতাখতাহু”
৩. যদি সে মৃত্যু বরণ করে থাকে তবে শুধু ইসতেগফার করবে।

No comments:
Post a Comment