Sunday, September 1, 2019

বউ বলে শাশুড়ি. খারাপ, শ্বাশুরী বলে বউ খারাপ-তাই এত অশান্তি।যদি সহনীয় হয়ে উভয়ে উভয়কে ভাল বলতো তবে পরিবারে আসতো শান্তি।

বউ তার বাপের বাড়ী গিয়ে তার বাপের কাছে নালিশ করে.বললঃ- বাবা, এ তুমি কেমন ঘরে আমার বিয়ে দিয়েছো??
বাবাঃ- কেন কি হয়েছে, জামাই কি খারাপ ব্যবহার করেছে ?
মেয়েঃ- তোমার জামাই তো দুই মাস পর পর বাড়ি আসে। সমস্যার কারণ তো আমার শ্বাশুড়ী।
সারাদিন বলে শুধু বৌমা এটা করো, বৌমা ওটা করো। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শুধুই খিট খিট করে
যান। আমার একটুও ভালো লাগেনা।
বাবাঃ- আরে এই বয়সে মানুষ একটু এই রকমই করেন।
মেয়েঃ- না বাবা, ঐ বুড়ি যতদিন পর্যন্ত না মরছে, আমি আর ঐ বাড়িতে ফিরে যাবো ই না।
বাবাঃ- এই রকম কথা বলতে নেই মা।
মেয়েঃ- তুমি তো ডাক্তার, এমন একটা কিছু ওষুধ দাও যাতে ঐ বুড়ি খুব তারাতারি মরে যায়।
বাবাঃ- আমি ডাক্তার, কসাই নয়, এ কাজ আমি করতে পারবো না।
মেয়েঃ- বাবা তুমি কি চাও না তোমার মেয়ে সুখে সংসার করুক?
বাবাঃ- (একটু চিন্তা করার পর) ঠিক আছে মা, তোর মুখের দিকে তাকিয়েই আজ আমি এই কাজ করছি, তোকে আমি একটা ওষুধ দিচ্ছি। এই ওষুধটা নিয়মিত প্রতিদিন দুই ফোটা করে গরম দুধের সাথে
খাওয়াবি। দেখবি এক মাসের মধ্যেই তোর শ্বাশুড়ী মারা যাবে। তবে এই এক মাস তুই তোর শ্বাশুরীর খুব সেবা করবি, এটা আমাকে কথা দে।
মেয়েঃ- ঠিক আছে বাবা, কথা দিলাম। মেয়ে ঔষধ নিয়ে আনন্দের সাথে শ্বশুড় বাড়ি চলে গেল। গিয়েই তার শ্বাশুড়ীকে মন দিয়ে সেবা করতে লাগলো আর নিয়মিত ওষুধ দিতে থাকলো।
পাঁচ দিন পর শ্বাশুড়ী লক্ষ করলেন যে তার বৌমা আর আগের মত নেই। এখন সে তার আর তার
কোন কথার ই অবাধ্য হয় না। আগের মত আর তার উপর বিরক্ত হয় না। আর খুবই বেশি সেবা
করছে।
২০দিন পর শ্বাশুরী তার বৌমাকে নিজের মেয়ের মত ভালবাসতে লাগলো। তখন তিনি
নিজেই বৌমার জন্য স্পেশাল মেনু বানিয়ে খাওয়ালেন। বৌমাকে আর আগের মত কোন কাজের জন্য
না বলে সেই কাজটা নিজেই সেরে নিতেন। বৌমার ঘুম ভাঙার অপেক্ষা না করে নিজেই চা
বানিয়ে বৌমার কাছে গিয়ে বৌমার ঘুম ভাঙিয়ে তার সামনে চায়ের কাপটা এগিয়ে দিয়ে বললেনঃ- বৌমা চা
খাও, দেখো আমি তোমার জন্য বানিয়েছি।
বৌমাঃ- কেন, মা আপনি আমাকে ডাকতে পারতেন তো।
শ্বাশুড়ীঃ- কি যে বলো বৌমা, তুমি সারাদিন ধরে এত খেটে আমার সেবা করছো আর আমি এই টুকু
করতে পারবো না ??
দিনটা ছিল ২৭তম।
এত দিনে শ্বাশুড়ী বৌমার সম্পর্কটা মা ও মেয়ের সম্পর্কে পরিনত হয়ে গেছে। তখন মেয়েটি
তার বাবার কাছে কাঁদতে কাঁদতে ছুটে এসে বললঃ- বাবা তুমি আমার শ্বাশুরী মাকে বাঁচাও।
আর মাত্র তিন দিন বাকি। আমি চাই না যে আমার শ্বাশুরী আমাকে ছেড়ে চলে যাক।উনি যে ঠিক আমার
মায়ের মত।
বাবাঃ- চোখের জল মুছে ফেল মা। আমি জানতাম একদিন তুই তোর ভুল ঠিকই বুঝবি, তাই আমি
তোকে কোনো বিষ দিইনি ঐ ওষুধে তোর শ্বাশুরীর কোন ক্ষতি হবে না। বরং ঐ ওষুধ খেলে শরীরে পুষ্টি হবে। যা মা সুখের সংসার কর।

বউ শ্বাশুরীর সম্পর্ক:
=============
বউ ডানে বলেন তো শাশুড়ি বলেন বামে। শাশুড়ির পছন্দ এক, বউয়ের আরেক। শাশুড়ি-বউয়ের মধ্যকার সম্পর্কের কথা বললে এমন সব দৃশ্যই চোখে ভাসে। এমন সাপে-নেউলে সম্পর্ক পরিবারে আনে অশান্তি। কিছু কৌশল অবলম্বন করলে শাশুড়ি-বউয়ের সম্পর্ক মধুর হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন কিছু কৌশলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে—
ভারসাম্য স্থাপন
অনেক ক্ষেত্রে শাশুড়ির ব্যবহার বউয়ের জন্য স্বস্তিদায়ক না-ও হতে পারে। বউকে আঘাত করে কথা বলতে পারেন তিনি। বউয়ের নেওয়া সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করতে পারেন। এ ধরনের সমস্যা এড়াতে শাশুড়ির সঙ্গে এক ধরনের ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করা উচিত।
নয় কোনো অবহেলা
মনে রাখতে হবে, স্বামীর জীবনে অন্যতম একজন গুরুত্বপূর্ণ মানুষ তাঁর মা। মা তাঁকে লালনপালন করে বড় করেছেন। এত দিন মা ছিলেন তাঁর সব। সুতরাং স্বামীর মাকে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। সংসারে, স্বামীর জীবনে তাঁর গুরুত্ব বুঝতে হবে। তাঁকে বোঝার চেষ্টা করুন। তাঁর সঙ্গে পরশ্রীকাতরতা পরিহার করুন।
বরফ গলান
শাশুড়ি ও বউয়ের মনমানসিকতা এক না হওয়াটাই স্বাভাবিক। দুজন দুজনের থেকে ভিন্ন। তাই দুজনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মতপার্থক্য দেখা দিতে পারে। কিন্তু এই মতপার্থক্য দূর করা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। শাশুড়ির সঙ্গে যথাসম্ভব বেশি বেশি কথা বলতে হবে। কথা বলে সম্পর্কের কঠিন বরফ গলাতে হবে। এতে স্বস্তির মাত্রা বাড়বে। শক্তিশালী হবে পারস্পরিক বোঝাপড়া।
নমনীয় হোন
শাশুড়ি তাঁর সিদ্ধান্তে একদমই অটল। বউও তাঁর দিক থেকে অনড়। এমন হলে সম্পর্ক দিন দিন খারাপের দিকেই যাবে। বরং এ ক্ষেত্রে বউ একটু নমনীয় অবস্থান গ্রহণ করতে পারেন। শাশুড়ির চোখরাঙানির মুখেও ধৈর্য ধারণ করুন। নরম সুরে কথা বলুন। শাশুড়ির সমালোচনা পরিহার করাই ভালো।
হাস্যরস করুন
হালকা ধরনের কৌতুক, হাস্যরস বউ-শাশুড়ির মধ্যকার সম্পর্ককে আরও সহজ করে তুলতে পারে। শাশুড়ি হয়তো বউয়ের বিরুদ্ধে সারাক্ষণ অভিযোগ করেই চলছেন। বউয়ের উচিত এটাকে সহজভাবে নেওয়া। হাস্যরস করে অভিযোগগুলো উড়িয়ে দেওয়া।
প্রশংসা
শাশুড়ির কাজের স্বীকৃতি দিন। পরিবারে তাঁর অবদান, ভালো কাজের প্রশংসা প্রকাশ্যে করুন। তাঁকে জানিয়ে দিন, তাঁর প্রতি আপনার কৃতজ্ঞতার কমতি নেই। তবে মাত্রাতিরিক্ত প্রশংসা পরিহার করা উচিত। কারণ, এতে আপনার মনোভাব প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। সুস্পষ্টভাবে মন থেকে পরিমিত প্রশংসা করুন।
ভুলের ব্যাখ্যা
কোনো কারণে দুজনের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি হলে দ্রুত তা ব্যাখ্যা করুন। ভয়ে বা লজ্জায় মনের মধ্যে কথা চেপে না রাখাই ভালো। শাশুড়ির পাশে গিয়ে বসুন। আন্তরিকতা নিয়ে ভুল-বোঝাবুঝির বিষয়টি তাঁকে গুছিয়ে বলুন।
তর্ক পরিহার
তর্কে তর্ক বাড়ে। দুজনে মধ্যে কোনো বিষয়ে বিরোধ দেখা দিলে পাল্টা জবাব বা তর্ক পরিহার করা শ্রেয়। ক্ষুব্ধ হয়ে শাশুড়ি তাঁর কথা চালিয়ে গেলেও আপনি থেমে যান। পাল্টা জবাব দিলে শাশুড়ি আরও কথা বলার সুযোগ পাবেন। এতে পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নিতে পারে। শান্ত হলে শাশুড়িকে সব বুঝিয়ে বলুন।

বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক সুন্দর রাখার উপায়
========================
আজ যে মেয়েটি বউ হয়ে অন্যের ঘরে গেল, একটা সময় সে-ই আবার নিজের সন্তানকে বিয়ে দিয়ে শাশুড়ি হন। ছেলে বিয়ে দিয়ে ঘরে বউ আনেন। কিন্তু, সময়ের দুই প্রান্তে দাঁড়ানো একই মানুষটি যেন দুইটি আলাদা সত্ত্বা। বউ হয়ে যে মেয়েটি শাশুড়িকে অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করতেন, শাশুড়ি হয়ে সেই মেয়েটিই বউকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করতে শুরু করেন। তবে বউ-শাশুড়ির প্রতিটা সম্পর্ক যে এমন এটাও ঠিক নয়। অনেক পরিবারেই এ দুইটি মানুষ এমন আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ হন যা যে কোন সম্পর্ককে হার মানায়।

সমাজে বউ-শাশুড়ির বৈরী সম্পর্ক নিয়ে যেমন নানা প্রবাদ আছে, তেমনি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের অবনতি কিংবা পারিবারিক কোনো দ্বন্দ্বে অনেক ক্ষেত্রেই বউ-শাশুড়ির সম্পর্ককে দায়ী করা হয়৷ আর তাই বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক সুন্দর রেখে সংসারে শান্তি বজায় রাখার কিছু উপায় জানিয়েছেন এক জার্মান বিশেষজ্ঞ৷
মনোভাব
বিয়ের আগে পর্যন্ত ছেলের ওপর মায়ের কর্তৃত্ব থাকে৷ কিন্তু ছেলের বিয়ের পর মা মনে করেন, তাঁর আদরের সন্তানটি বুঝি হাতছাড়া হয়ে গেল৷ অনেক মা মনে করেন, ছেলে বিয়ে করায় সংসারে তাঁর নিজের মূল্য কমে গেছে৷ মায়েদের এ মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে৷

ব্যক্তিস্বাধীনতা
বউ কী করে, কোথায় যায়, কোথায় বেশি পয়সা খরচ করে, তার বন্ধুরা কেমন ইত্যাদি বিষয়ে শাশুড়ির জানার আগ্রহ প্রচণ্ড, যা কিনা বউয়ের মনে বিরক্তির উদ্রেক করে৷ এ যুগের অনেক বউই চান, স্বাধীনভাবে চলতে, কিন্তু শাশুড়ির ব্যবহারের কারণে তা অনেক সময় সম্ভব হয় না৷ বউ বাড়িতে না থাকলে অনেক শাশুড়ি তো ছেলের বউয়ের অনুপস্থিতিতে তাঁর জিনিসপত্রও ঘাঁটাঘাটি করেন! এমন আচরণে পারস্পরিক শ্রদ্ধা কখনো বাড়ে না, উল্টো কমে।

সমাধানের উপায়?
বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক মধুর করতে শাশুড়িতে যেমন ভূমিকা রাখতে হয় তেমনি রাখতে হয় বউকেও। পরিবার বিষয়ক জার্মান বিশেষজ্ঞ ইংগ্রিড রটের মতে- বউ সবসময় শাশুড়িকে মায়ের মতো শ্রদ্ধা করবে এবং তা তাঁকে বুঝতে দেবে। এতে বউয়ের প্রতি শাশুড়ির মমতা বাড়তে থাকবে। তবে বউ কখনো শাশুড়ি থেকে সেরকম ভালোবাসা আশা করবেন না, যা আপনার মা-বাবা আপনাকে দিয়েছে৷
কিছুতেই মেনে নেওয়া সম্ভব না হলে কি করণীয়?
বিয়ের পর স্বামীকে সব স্ত্রী-ই পুরোপুরি নিজের মতো করে পেতে চান৷ আর সেই জায়গায় ভাগাভাগির বিষয়টি কোনোভাবে মাথায় এলেই বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে৷ এ পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই শাশুড়ির সাথে মানিয়ে নেওয়া সম্ভব না হলে দূরত্ব বজায় রাখুন এবং সে কথা শাশুড়িকে নম্রতার সঙ্গে সরাসরি জানিয়ে দিন৷ তখন শাশুড়ির কোনো পরামর্শ পছন্দ না হলেও চুপ করে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ৷
শাশুড়ি যা ভাবেন
বিয়ের পর ছেলে আর আগের মতো মায়ের খোঁজ নেয় না বা আগের মতো সখের খাবারগুলো খায় না– অনেক মা-ই এমন ভাবেন৷ ছেলের জীবনযাপন বা খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসা একেবারেই স্বাভাবিক৷ অথচ ছেলেকে বুঝতে খানিকটা ভুলই করেন মা৷ কারণ, নতুন জীবনে পরিবর্তন আসবে এটাই বাস্তব৷ তা মেনে নিলেই কিন্তু আবার সংসারে সুখ ফিরে আসতে পারে৷

শ্রদ্ধাবোধ
ছেলে ভালো থাকুক, সুখে থাকুক, তা পৃথিবীর সকল মা-ই চান৷ কাজেই ছেলের মতামতের প্রতি মায়ের শ্রদ্ধা রাখা দরকার৷ রাগারাগি বা অভিমান না করে সমস্যা নিয়ে বউয়ের সাথে সরাসরি কথা বলুন৷ এ যুগের আধুনিক এবং শিক্ষিত মেয়েরা অবশ্যই তা বুঝবে৷ যে কোনো সম্পর্কে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা অনেক বড় বিষয়৷
বউ শাশুড়ির দ্বন্দ্ব
বউ-শাশুড়ি ‘বেস্টফ্রেন্ড’ হবেন তা ধরে না নেয়াই ভালো৷ যে শাশুড়ি নিজের শাশুড়ির কাছে খারাপ ব্যবহার পেয়েছেন, তার মাথায়ও ওই বিষয়গুলো গেঁথে থাকে। তিনি হয়ত কথায় কথায় সেই উদাহরণ টেনে বউকে চাপে রাখতে চান। অনেক সময় তিনি মনে করেন এটাই ঠিক। তবে নিজের শাশুড়ির কাছ থেকে খারাপ আচরণের শিকার হওয়া শাশুড়ি তো বুঝবেন কতটা কষ্ট তাকে পোহাতে হয়েছে। তাই নিজের বৌমা যাতে একই আচরণের শিকার না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকাই উচিত তার৷ কারণ, সময় পাল্টে গেছে, সব খারাপ বিষয়গুলোকে ঝেড়ে ফেলার সময় এসেছে। সময়ের সাথে মানিয়ে চলতে পারলে নিজেরই সুখ৷
আজকের নারী
আজকের যুগের নারীদের অনেকেই চাকরিজীবী, তাই সবকিছু সামলে নিয়ে আগের দিনের মতো শাশুড়ির সেবা করা তাঁদের জন্য বেশ কঠিন৷ সেটা শাশুড়িকে বুঝতে হবে৷ আবার বউকেও বুঝতে হবে, শাশুড়ির দিকে মাঝে মাঝে কিছুটা মনোযোগ দেওয়া উচিত, বিশেষ করে ছুটির দিনে৷ তার মনটাও তো চায় আপনার কাছ থেকে কিছুটা সেবা পেতে। সময় পেলে শাশুড়ির সাথে গল্প করুন, স্বাস্থ্যের খবর নিন, শপিংয়ে যান কিংবা কোনো উপলক্ষে তাঁকে উপহার দিন৷ এতে সম্পর্ক সুন্দর হবে৷
নাতি-নাতনি
নাতি নাতনিকে শাশুড়ির কাছে নিয়মিত যেতে দিন৷ শাশুড়ি যত প্রভাবশালীই হোন না কেন, দেখবেন ধীরে ধীরে তিনি বউকে পছন্দ করতে শুরু করেছেন৷
বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা যায়, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক সাধারণভাবে প্রায় একই রকম৷ জার্মানিতে দুইজন নারীর মধ্যে সম্পর্ক খারাপ থাকলে, বউ- শাশুড়ি কিংবা ননদ-ভাবীর মতো সম্পর্ক বলে ঠাট্টা করা হয়ে থাকে৷ তবে বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক সুন্দর রেখে সংসারে শান্তি বজায় রাখা সম্ভব, যদি দু’পক্ষই সেটা চায়৷

বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক খারাপ হওয়ার যতসব কারণ
=======================================
দু'জন নর ও নারীর বৈবাহিক সম্পর্কের মাধ্যমে সংসার শুরু হয়। এরপর একে একে বাড়তে থাকে সংসারের সদস্য সংখ্যা। আর এ সংসারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের মধ্যে অন্যতম হলেন শ্বশুর ও শাশুড়ি। এদের মধ্যে শ্বশুর ও স্বামীকে দিনের বেশিরবাগ সময়ই কাজের তাগিদে বাইরে থাকতে হয়। অন্যদিকে সংসারে ছেলের বউ আর শাশুড়ির উপস্থিতি সব সময়। এখন অবশ্য অনেক ছেলের বউকেও চাকুরি করতে দেখা যায়। তারপরও বউ-শাশুড়ির সম্পর্ক নিয়ে বাধে নানা ঝামেলা। তবে সব সময় শুধু ঝামেলা বাড়ে তা নয়; কখনও কখনও দু'জনের মধ্যে সখ্যতাও লক্ষ করা যায়।

সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, শাশুড়ি বউয়ের মধ্যেকার একটা দ্বান্দ্বিক সম্পর্ক চিরাচরিত। অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশে এই অবস্থা বিদ্যমান। দেশটিতে শিক্ষার হার বাড়ছে এবং মেয়েরা কর্মক্ষেত্রে আসছে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, শাশুড়িরা এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পুত্রবধূ নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুণ নয়, রূপকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। এ কারণেই সমস্যা বাড়ে।

আমাদের সমাজে প্রায়ই আমরা দেখতে পাই শাশুড়ি-বউ এর খারাপ সম্পর্ক। বেশিরভাগ সময়ই দোষ একজনের ঘাড়ে এসে বর্তায়। এতে সংসারে অশান্তিও বেড়ে যায়। পরবর্তীতে সে সংসার ভেঙ্গে খান খান হয়ে যায়। কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতি হয় তা কখনও ভেবে দেখেছেন? শুনতে খারাপ লাগলেও এটাই সত্যি, অধিকাংশ শাশুড়িও ছেলের বউকে মন থেকে ভালোভাবে মেনে নিতে পারেন না। এ কারণেও সমস্যা বাধে। বিশেষ করে একমাত্র ছেলে হলে সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করে। বউ-শাশুড়ির খারাপ সম্পর্কের যত কারণ-

ছেলের জীবনে দখলদারিত্ব
বিয়ে করানোর আগ মূহূর্ত পর্যন্ত খুব স্বাভাবিকভাবে ছেলের জীবনের পুরো দখলটা মায়ের থাকে। কিন্তু বিয়ে করার পরেই সেই দখলদারিত্ব অনেকাংশেই ছেলের বউয়ের কাছে চলে যায়। ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও এই দখলদারিত্বের হাত বদল অনেক শাশুড়িই মেনে নিতে পারে না। এ কারণেই তাদের মধ্যকার সম্পর্ক ধীরে ধীরে খারাপ হতে থাকে।

সংসারের ভাগ দেওয়া
ছেলেকে বিয়ে করানোর আগ পর্যন্ত পুরো সংসারটা শাশুড়ির কর্তৃত্বেই থাকে। কিন্তু বিয়ের পরে স্বাভাবিকভাবেই ঘর, বাড়ি, রান্নাঘর, সংসারের টাকা পয়সা, নিয়মকানুন অনেক কিছুই ছেলের বউয়ের অধীনে চলে যায়। আর হঠাত্ এই পরিবর্তনটা অনেক শাশুড়িই মেনে নিতে পারেন না এবং মনের গভীরে অভিমানের সৃষ্টি হয়। আর এই অভিমানের ফলেই ছেলের বউয়ের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ হয়।

ছেলের জীবনে গুরুত্ব কমে যাওয়া
ছোটবেলা থেকে ছেলেকে বড় করা পর্যন্ত ছেলের জীবনের প্রতিটি কোণা জুড়ে থাকে মা। কিন্তু বিয়ের পর খুব স্বাভাবিকভাবেই ছেলেরা স্ত্রীকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কিন্তু এই বাস্তব সত্যটি মেনে নিতে পারে না অধিকাংশ ছেলের মা। আর তাই ছেলের বউ এর সঙ্গে অহেতুক খোঁচাখুঁচি লাগিয়ে রাখার প্রবণতা দেখা দেয় শাশুড়িদের মধ্যে।

হিংসুটে
কিছু মানুষের স্বভাবই থাকে হিংসুটে ধরণের। তারা ছেলের প্রেমিকা, স্ত্রী, বন্ধু বান্ধব সবার সঙ্গেই হিংসাত্মক আচরণ করে। এ ধরণের শাশুড়িরা ছেলের বউয়ের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হিংসা করে এবং বউয়ের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে বিকৃত মানসিক শান্তি পায়।

হীনমন্যতা
সংসারে নতুন বউ এলে সবাই নতুন বউটিকে নিয়েই ব্যস্ত হয়ে যায়। নিজের সংসারে, আত্মীয়স্বজনদের কাছে, ছেলের কাছে সব জায়গাতেই আকর্ষণের মূল কেন্দ্রবিন্দু থাকে ছেলের বউটি। ফলে শাশুড়িদের মনের অজান্তেই এক ধরনের হীনমন্যতা কাজ করে। সংসারে নিজের গুরুত্ব কমে যাচ্ছে মনে করে ছেলের বউয়ের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। এতে করে তাদের দুজনের মধ্যে আর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকে না।

প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব
অনেক শাশুড়ি আছেন যাদের সবক্ষেত্রেই প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব থাকে। তাদের এই প্রতিযোগিতার কবল থেকে রক্ষা পায় না ছেলের বউও। এ ধরণের শাশুড়িরা সব সময়েই জাহির করার চেষ্টায় থাকে যে কম বয়সে সে তার ছেলের বউয়ের চাইতে অনেক বেশি সুন্দরী ছিল, তার পরিবার অনেক বড়লোক, বনেদী বংশে জন্ম নিয়েছেন তিনি। এসব জাহির করে তারা ছেলের বউকে ছোট করার চেষ্টা করে। কারণে অকারণে এ ধরণের শাশুড়িরা বউকে মানসিক কষ্ট দিয়ে অনেক শান্তি পায়।

বার্ধক্যে একাকীত্বের ভয়
ছেলের বউয়ের সঙ্গে হিংসা করার পেছনে শাশুড়িদের একটি মানসিক ভয় কাজ করে। আর তা হলো তারা মনে করে ছেলের বউ তাদেরকে ছেলের কাছ থেকে দূরে ঠেলে দেবে এবং বার্ধক্যে তার কোন আর্থিক কিংবা আবাসিক সমর্থন থাকবে না। এই আতংকে শাশুড়িরা ক্রমাগত ছেলের বউ বিদ্বেষী হয়ে ওঠে এবং অহেতুক তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে।

1 comment:

ছোট্ট একটি তাসবিহ কিন্তু সাওয়াব-ফজিলত অনেক বেশি।

উম্মত জননী হজরত জুওয়াইরিয়া (রা.) বর্ণনা করেন, একদিন আল্লাহর নবী (সা.) ফজরের সময় আমার ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। তখন আমি জায়নামাজে ছিলাম। ত...