Wednesday, September 4, 2019

মানুষ যখন কবরে চলে যায়,আজাবের সম্মুখীন হয়ে যায়,তখন ৮টি আফসোস করে:


(১) ওগো আল্লাহ দুনিয়ায় যদি আমি মানুষ হিসাবে না থাকতাম, যদি মাটি হয়ে থাকতাম।হয়তো বা আমার কোন বিপদ হতো না,কোন বিচার হতো না।কবরের জীন্দেগীতে আমি শাস্তির সম্মুখীন হতাম না।

(২) দুনিয়ায় মানুষ যারা আল্লাহকে ডাকে,আল্লাহর কাজ করে না,পরকালের জন্য পাথেয় গুছায় না,তারা শুধু দুনিয়াকে নিয়ে নিজেকে মত্ত রাখে। এমন মানুষ যখন কবরের জীন্দেগীতে চলে যায়,যাওয়ার পরে দেখে নিজের আমালের ঝুড়িটা একেবারে শুন্য হয়ে গেছে। তখন এই কথা বলতে থাকে,আল্লাহ দুনিয়ার জীন্দেগীতে আমি কেন পরকালের জন্য পাথেয় গুছিয়ে আসলাম না।

(৩) কবরের মধ্যে যখন বান্দাকে পেটানো হয়,আল্লাহর আজাবের স্বাদ আস্বাদন করানো হয়,তখন বান্দা আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিনের উদ্দেশ্যে বলতে থাকে:যদি আমার আমল নামা আমার সামনে না দেখানো হতো,কতই না ভাল হতো।আমার আমল নামা আমার সামনে দেখানোও হতো না,আমলনামা ফেরেশতা যদি না লিখতো আমার সামনেও আসতো আর আমার আজাবও হতো না।

(৪) এই দুনিয়ার জীন্দেগীতে যাদের সাথে চললে আল্লাকে স্মরণ হতো,আল্লাহর দ্বীনকে বুঝা যেত,আল্লাহর কুরআনকে বুঝা যেত,যাদেরকে বন্ধুরুপে গ্রহণ করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আখেরাতের জীন্দেগীতে শান্তি দিত-এমন মানুষকে কেউ বন্ধুরুপে গ্রহণ করে নাই।বন্ধুরুপে গ্রহণ করেছে জালিমদেরকে,বন্ধুরুপে গ্রহণ করেছে শাসকদেরকে-যারা জুলুমবাজ ছিল,যারা মানুষের উপর অন্যায় করেছে,অত্যাচার করেছে,মানুষের হ্বক নষ্ট করেছে।এমন ক্ষমতাধরদের সংগে বন্ধুত্ব করেছে,আলেম ওলামার সংগে বন্ধুত্ব করে নাই,আল্লাওয়াদের সাথ বন্ধুত্ব করে নাই।তারা ঐ কবরের জীন্দেগীতে বলবে হায়,আমি যদি দুনিয়ার বুকে আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিনের খাস বান্দাদের সাথে বন্ধুত্ব করতাম,আমার কতই না, ভাল হতো।আপনার যদি বন্ধুত্ব আলেমদের সাথে,আপনার হাশর হবে নবীদের সংগে।কারন আল্লাহর নবী বিশ্ব নবী (সা:) বলেছেন: আলেমরা হচ্ছে নবীদের ওয়ারিস।

(৫) আপনি যদি আলেমের সাথে চলেন,আলেমকে যদি বন্ধু রুপে গ্রহণ করেন,আপনি কখনেই খারাপ পথে যাবেন না,আপনি ভাল পথে থাকবেন,ভাল জিনিসই শুনবেন।আল্লাওয়ালার সংগে গেলে আপনি আল্লাহর কথাই শুনবেন। কিন্তু ব্যাভিচারীর কাছে গেলে আপনি শুধু ব্যাভিচার আর জেনার কথাই শুনবেন।আপনি ঘুষ খোরের সংগে চললে ঘুষ কিভাবে খায় , এই তরীকা শিখতে পারবেন, সহীহ কায়দায়।আপনি যদি বড় বড় ডন হত্যাকারী মাফিয়া গড ফাদারের সংগে চলেন,তাহলে আপনি মানুষ হত্যার কৌশলই শিখবেন।কিন্তু আপনি যদি খতীবের সংগে চলেন,আলেমের সংগে চলেন,কখনো আপনি ঘুষের কায়দাও শিখবেন না,কখনো আপনি হত্যার কায়দাও শিখবেন না।- এজন্য কবরবাসী আক্ষেপ করতে থাকবে কবরের জীন্দেগীতে, দুনিয়ার জীন্দেগীতে হায় কেন আমি ভাল কাউকে বন্ধু রুপে গ্রহণ করি নাই।

(৬) আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিন বলেন: কবরের জীন্দেগীতে - যারা মানুষের অনুসরন করেছে, মানুষের অনুকরন করছে,মানুষের বিধানের পিছনে ছুটেছে, গোলামের মতো,আল্লাহর বিধানের দিকে খেয়াল করে নাই,রাসুলের সন্নার দিকে খেয়াল করে নাই। কবরের জীন্দেগীতে তারা বলবে , হায়রে,আমি যদি দুনিয়ার জীন্দেগীতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের আদেশ গুলোকে অনুসরন করতাম,নবীর তরিকাকে যদি অনুকরন অনুসরন করতাম,আল্লাহ রাববুল আ’লামিন আজ আমাকে কবরের আজাবে ফেলতো না।
আপনি দুনিয়ার যত মত,যত আদর্শের পিছনে দৌড়ান না কেন কবর কিন্তু আপনাকে শাস্তি থেকে মুক্তি দিবে না। দুনিয়ার কোন মত কোন পথ জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিবে না। একমাত্র কুরআন সুন্নাহের মত এবং কুরআন সুন্নাহের পথ জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবে। আপনি যদি জাহান্নামের আগুন থেকে কবরের আগুন থেকে মুক্তি পেতে চান , তাহলে আল্লাকে আর আল্লাহর রাসুলকে আপনার অনুসরন করতে হবে।

(৭) কবরবাসী বলবে আল্লাহর রাসুল যে পথ বলে দিয়েছিলেন সে পথ যদি অবলম্বন করতাম,তাহলে হয়তো কবরের জীন্দেগীতে এই সাপে ছোবল আমার গায়ে আসতো না।আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিন জাহান্নামের আগুন কবরের মধ্যে জ্বালাতেন না।
মানুষ যখন দুনিয় ছিল তখন তারা বুঝতো কোনট ভাল কাজ কোনটা খারাপ কাজ কোনটা সফলতা পথ কোনটা অসফলতার পথ।মানুষ বুঝার পরেও না বুঝার ভান করে ছিল।জানার পরেও না জানার ভান করে ছিল।দেখার পরেও অন্ধের মতো,শোনার পরেও বধিরের মতো ভান করেছিল।আজকে কবরের জীন্দেগীতে ঐ মানুষগুলো যখন কবরের আজাবের সম্মুখীন হয়ে যাবে। বার বার বলবে হয়রে,যদি আমি সফলকামদের পথ অনুসরন করতাম যেভাবে ইমামরা খতীবরা বলেছে আজকে আমার পরিস্থিতি কবরের মধ্যে এমন ভয়াবহ হতো না। কোন লোকটা মুমিন কোন লোকটা মুত্তাকি এটা তার চরিত্র দেখে বুঝা যায়। কিন্তু আমরা বুঝার পরেও, দেখার পরেও না দেখার ভান করে থাকি,শোনর পরেও না শোনার ভান করে থাকি। কবরের আজাবের মধ্যে যখন আপনি পরে যাবেন তখন এই বিষয়গুলো আপনার মনে পরে যাবে।

(৮) যারা শিরিক করেছিল তারা বলবে, আমি যদি দুনিয়ার জীবনে আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিনের সাথে কাউকে শরীক না করতাম। অমি যদি আল্লাহর মালিকায় কাউকে সাবেত না করতাম,সব সময় যদি আল্লহ রাব্বুল আলামিনের মুখাপেক্ষি থাকতাম।তাহলে হয়তোব কবরের জীন্দেগীতে আল্লহ রাব্বুল আলামিন আমাকে এভাবে আজাব দিতেন না। আমি যদি শিরিক না করতাম আখিরাতেও পার পেয়ে যেতাম। তাহলে কবরের জীন্দেগীকে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জান্নাতের টুকরা বানিয়ে দিতেন।

সুতরাং আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা যাবে না, আল্লাহর মালিকানায় কাউকে অংশ দেয়া যাবেনা। মানুষ মানুষের জায়গায় , দুনিয়ার মানুষ কখনো আল্লাহর সমকক্ষ হতে পারে না। মর্তিগুলোও যেমন আল্লাহর সমকক্ষ হতে পারে না বা কবরের মধ্যে যে আছে সেও আল্লাহর সমকক্ষ হতে পারে না। সুতরাং শিরিক করা যাবে না,শিরিক যদি আপনি না করেন ,কবরের জীন্দেগীটা আপনার জন্য শান্তিময় করে দেবেন।

কবর খুবই ভয়াবহ জায়গা,কবরের চিত্র যদি না দেখানো হয় তবে আপনি বুঝবেন না।

No comments:

Post a Comment

ছোট্ট একটি তাসবিহ কিন্তু সাওয়াব-ফজিলত অনেক বেশি।

উম্মত জননী হজরত জুওয়াইরিয়া (রা.) বর্ণনা করেন, একদিন আল্লাহর নবী (সা.) ফজরের সময় আমার ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। তখন আমি জায়নামাজে ছিলাম। ত...